আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

২ শিশুকে যৌন নির্যাতন, সালিশীতে মীমাংসা করায় তদন্ত কমিটি

মাদারীপুর জেলার শিবচরে দুই শিশুকে যৌন নির্যাতনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত থেকে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে তিন লাখ টাকায় মীমাংসার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

বুধবার (১০ মার্চ) বিকেলে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. রহিমা খাতুন এই তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

জানা গেছে, শিবচর উপজেলার উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের একটি গ্রামে কিছুদিন আগে দশ বছরের দুই শিশুকন্যাকে জাম্বুরা খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে ঘরের ভিতরে নিয়ে যৌন নির্যাতন চালায় প্রতিবেশী আকমান মাদবর (৫০) নামের এক ব্যক্তি। প্রথমে বিষয়টি গোপন থাকলেও পরবর্তীতে যৌন নির্যাতনের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে গত ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন হাওলাদার নির্যাতনের শিকার ওই শিশুকন্যার বাড়ির উঠানে মীমাংসার জন্য সালিশ বৈঠক করেন। শত শত মানুষের উপস্থিতিতে সালিশে অভিযুক্ত আকমান মাতবরকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়াও চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সালিশদাররা অভিযুক্তকে ১০টি বেত্রাঘাত দিয়ে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান। এর পর পরই অভিযুক্ত আকমান অসুস্থ হয়ে পড়লে থাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে আকমানের পরিবারের লোকজন। সালিশীর ১৬ দিন পেরিয়ে গেলেও নির্যাতিত দুই শিশুর পরিবারকে চেয়ারম্যানের করা সালিশীর জরিমানার তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া স্থানীয়ভাবে চাপের মুখে রাখা হয় ওই শিশু দুইটির পরিবারকে। এক পর্যায়ে শিবচর থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পারলে গত ০৮ মার্চ সোমবার বিকেলে নির্যাতিত শিশু দুটির পরিবারকে বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে আসে। 

ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ওইদিনই রাতে আকমানকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন ওই শিশুর পরিবার। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এলে বুধবার গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন জানান, শিশু নির্যাতনের মতো ঘটনা চেয়ারম্যান সালিশী কোন অবস্থাতে করতে পারে না। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রদান করলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেখ সোহান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন