দুর্ঘটনা

বেইলি রোডের ভবনটি যে কারণে ‘অগ্নিচুল্লিতে’ পরিণত হলো

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজ নামের ভবনটির পুরোটা জুড়েই ছিল খাবার ও কাপড়ের দোকান। যদিও ভবনটি ‘কাচ্চি ভাই’ বিরিয়ানি ভবন নামে খ্যাতি পেয়েছে। তবে এখানে আরও বেশ কয়েকটি খাবারের দোকা ছিলো। সাততলা এ ভবনের ছাদেও ছিল একটি রুফটপ রেস্টুরেন্ট। ভবনটিতে পিজ্জা ইন, স্ট্রিট ওভেন, খানাসসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এছাড়া ইলিয়েন, ক্লোজেস্ট ক্লাউডসহ জনপ্রিয় বিপণিবিতানও রয়েছে। ভবনের দ্বিতীয় তলায় 'কাচ্চি ভাই'-এর শাখা ছিল। সবারই ছিলো একাধিক গ্যাস সিলিন্ডার। যা রাখা ছিলো সরু সিঁড়িটিতে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১গটার দিকে লাগা আগুনে পুড়ে যায় ভবনটির খাবার ও কাপড়ের দোকান। ভবনটির সামনেসহ সিঁড়িতে রাখা ছিল গ্যাসের সিলিন্ডার।

সিঁড়ি ও ভবনের সামনে রাখা গ্যাস সিলিন্ডারগুলোই প্রাণ নিয়ে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ সিঁড়িকে মৃত্যুকূপে পরিণত করে।

র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ আলম বলেন, নিচের একটি ছোট দোকানে প্রথমে আগুন লেগেছিল। সেখানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে তারা প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন। পরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ মানুষই ধোঁয়ার কারণে শ্বাসরোধে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, ভবনটিতে একটি মাত্র সিঁড়ি ছিল। দুটি লিফট ছিল। ভবনের নিচতলার প্রবেশমুখে আগুন লাগার পর কেউ নামতে পারেনি।

খুরশীদ আলম বলেন, কারা সিঁড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার রেখেছে, তা বের করা হবে। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারাও রিপোর্ট দেবে।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, সিঁড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার থাকার কারণে পুরো সিঁড়িটি 'অগ্নিচুল্লির' মতো হয়ে গিয়েছিল। সে কারণেই কেউ সিঁড়ি ব্যবহার করে নামতে পারেনি।

স্থানীয়রা জানান, সিঁড়ি দিয়ে একসঙ্গে তিনজনের বেশি যাতায়াত করা যেত না।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও লোকজন জানান, ভবনের সিঁড়িতে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার এ সময় বিষ্ফোরিত হয়। পুরো ভবনটি এখন এক পুড়ে যাওয়া কঙ্কালের মতো দাঁড়িয়ে আছে। এ পর্যন্ত জীবন কেড়ে নিয়েছে ৪৬ জনের।

বেইলি রোডের ভিকারুননিসার মোড় থেকে ভিআইপি সড়ক পর্যন্ত প্রায় ৩০টি ভবনে অন্তত ১৫০টি খাবারের দোকান রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে নামি-দামি খাবারের দোকানের শাখা রয়েছে।

এসব খাবারের দোকানের অধিকাংশ দোকানেই সিলিন্ডারের গ্যাস ব্যবহার করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন