সাংবাদিকদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিরোধ খুব বেশি
পেশাগত কারণে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, আমরা দেখছি যে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যতটা বিরোধ সাংবাদিকদের মধ্যেও প্রাতিষ্ঠানিক বিরোধ খুব বেশি।
আজ সোমবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের এই অনশন কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের উদ্যোগে করাবন্দি সম্পাদক আবুল আসাদ, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলামসহ আটক সাংবাদিকদের মুক্তি ও সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে তিনঘণ্টার এই প্রতীকী অনশন হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যে যেই মতেরই হোক না কেনো তার ওপরে যখন নির্যাতন আসে সাংবাদিকরা এক সুরে এক কন্ঠে কথা বলতে পারে না। না বলার কারণে অত্যাচারের স্টিমরোলারটা সাংবাদিকদের ওপরে যত্রতত্র হচ্ছে। শুধুমাত্র আইনের ভাষায় নয়, এমনকি দৈহিক নির্যাতন এবং হত্যা-খুনের শিকারও হচ্ছেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, আজকে সংবাদ জগতের লোক একজন সাংবাদিক আরেকজন সাংবাদিকের প্রতি সহমর্মিতা থাকবে। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কারো কোনো মতাদর্শ থাকতে পারে কিন্তু আমরা যদি শুনি বা কোনো দেশ যদি দেখে-এই সাংবাদিক বিএনপির পক্ষে, ওই সাংবাদিক আওয়ামী লীগের পক্ষে। তখন সাংবাদিকদের প্রতি যে আস্থা, সমাজ যেটা চায় সেটা কিন্তু তারা পায় না, তারা আশাহত হয়।
গয়েশ্বর বলেন, সাগর-রুনির ঘটনায় তো অনেক কিছু হওয়ার কথা। আমরা দেখলাম, সাগর-রুনির ঘটনার প্রতিবাদ করতে ক্ষতিপূরণ বাবত একজন হয়তো নেতা পুরস্কৃত হয়েছেন। এই পুরস্কারের মধ্যে যদি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি যদি নীরব হয়ে যায় তাহলে তো হত্যাকাণ্ড চলবে। আজকে সাগর-রুনির হত্যার বিচারের বিষয়ে ৭৬ বার সময় পিছিয়েছে, আজকে প্রথম আলোর সম্পাদক জনাব মতিউর রহমান হয়ত রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে আমাদের বিপরীতমুখী আমার মনে হয়। তারপরেও তিনি একজন সম্পাদক, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। অন্যান্য সংবাদপত্রের যারা সম্পাদক আছেন তারা কি তার প্রতিবাদে রাস্তায় নামছেন? নামেন নাই। একজন সাংবাদিকের ওপরে আঘাত আসলে সকল সংবাদপত্রের সাংবাদিক যদি একসঙ্গে হয় তাহলে আঘাত করতে সরকার ভয় পায়। আপনাদের মধ্যে একটা ঐক্যমত থাকা উচিত, যেই ঐক্যমতটা আমরা দেখতে পারছি না।
বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, কারাবন্দী সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, আবুল আসাদসহ সকল সাংবাদিকের মুক্তির দাবি করি। এই মুক্তির দাবি আন্দোলনকে আমরা জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের সাথে একীভুত করতে চাই। আমাদের এই আন্দোলন শুধু আমাদের অধিকারের জন্য নয়, এটা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বন্দী, সরকারের নির্যাতনে তারা আক্রান্ত। জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম অর্থাৎ গণতন্ত্রে ফেরার জন্য পুরো জাতির যে আকুতি, সেই আকুতির সঙ্গে আমাদেরকে একত্রীভুত হয়ে আমরা সরকার পতনের আন্দোলন করতে চাই।’
সাংবাদিক নেতা শফিউল আলম দোলন ও আল-আমিনের পরিচালনায় প্রতীক অনশনে আরও বক্তব্য দেন- বিএফইউজের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির শামীমুর রহমান শামীম, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ প্রমুখ।