ভাত-ভর্তায় বাঙালিয়ানা
বাঙালির পেটের সাথে মন জুড়াতে পাতে রকমারি ভর্তা, সাথে মরিচ আর পেঁয়াজ! ব্যস, আর কিছু চাই না। ভাত-ভর্তা বাঙালির ঐতিহ্য। পহেলা বৈশাখ ছাড়াও নিত্য দিন ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়ার চল সেই আদিকাল থেকেই। হাতের কাছে থাকা উপকরণ দিয়েই কিন্তু মজার মজার ভর্তা বানিয়ে নেয়া যায়। চলুন দেরি না করে জেনে নেই কয়েকটি জনপ্রিয় ভর্তার রেসিপি! ১. বেগুন ভর্তা উপকরণ বেগুন- ১টি
কাঁচামরিচ কুঁচি- ২ চা চামচ
পেঁয়াজ কুঁচি- ২ চা চামচ
ধনেপাতা কুঁচি- ১ টেবিল চামচ
লবণ- পরিমাণমতো
সরিষার তেল- সামান্য প্রস্তুত প্রণালী প্রথমে চুলা জ্বালিয়ে একটা তাওয়ার ওপর ধুয়ে রাখা আস্ত বেগুন দিয়ে দিন। বেগুনের গায়ে কাঁটা চামচ দিয়ে কয়েকটি ছিদ্র করে দিতে হবে। মাঝারী আঁচে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বেগুনটি পুড়িয়ে নিন। একটু সময় নিয়ে পোড়াতে হবে, তা না হলে ভেতরে কাঁচা থেকে যাবে। ভালোভাবে পোড়ানো হয়ে গেলে কালো হয়ে যাওয়া খোসা ফেলে দিন। তারপর বেগুনের সাথে পেঁয়াজ কুঁচি, কাঁচামরিচ কুঁচি, ধনেপাতা কুঁচি, সরিষার তেল ও লবণ দিয়ে ভর্তা মাখিয়ে নিন। ব্যস, বেগুন ভর্তা রেডি হয়ে গেলো! ২. পেঁপে ভর্তা উপকরণ
কাঁচা পেঁপে- ২৫০ গ্রাম
কাঁচামরিচ- ৩টি
পেঁয়াজ কুঁচি- ১ টেবিল চামচ
সরিষার তেল- ২ চা চামচ
কালোজিরা– ১/২ চা চামচ প্রস্তুত প্রণালী প্রথমে পেঁপে চাক চাক করে কেটে সেদ্ধ করে নিন অথবা ভাপিয়ে নিন। তারপর অন্য একটি প্যানে সরিষার তেল গরম করে তাতে কালোজিরা ফোঁড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুঁচি ও মরিচ হালকা করে ভেজে নিন। এবার তাতে পেঁপে দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে থাকুন এবং লবণ দিয়ে দিন। ঘুঁটনি দিয়ে পেঁপে ম্যাশড করে ফেলুন। ব্যস, মজাদার পেঁপে ভর্তা রেডি! ৩. ১০টি ভর্তার রেসিপি এর মধ্যে আলু ভর্তা উপকরণ আলু- ২টি
পেঁয়াজ কুঁচি- ২ চা চামচ
শুকনো মরিচ- ২টি
লবণ- সামান্য
সরিষার তেল- সামান্য প্রস্তুত প্রণালী প্রথমে আলু সেদ্ধ করে চটকিয়ে নিন। একটি প্যানে সরিষার তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি ও শুকনো মরিচ মুচমুচে করে ভেজে নিতে হবে। এবার ভেজে রাখা পেঁয়াজ কুঁচি, মরিচ, লবণ ও তেল দিয়ে আলু মাখিয়ে নিলেই আলু ভর্তা রেডি! ৪. লাউপাতার ভর্তা উপকরণ লাউপাতা- ৬টি
রসুন- ৪ কোঁয়া
শুকনো মরিচ- ২টি
সরিষা- ১ চা চামচ
লবণ- স্বাদ অনুযায়ী প্রস্তুত প্রণালী প্রথমে লাউপাতাগুলো লবণ দিয়ে ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিন। এবার শুকনো প্যানে টেলে নেওয়া রসুন ও মরিচের সাথে সামান্য সরিষা দিয়ে লাউপাতাগুলো পাটাতে বেটে নিন। সুস্বাদু লাউপাতা ভর্তা তৈরি হয়ে গেলো! ৫. মসুর ডালের ভর্তা উপকরণ সেদ্ধ করে রাখা মসুর ডাল- ১ কাপ
পেঁয়াজ কুঁচি- ১ চা চামচ
কাঁচামরিচ কুঁচি- ২ চা চামচ
ঘি- ২ চা চামচ
লবণ- পরিমাণমতো প্রস্তুত প্রণালী সেদ্ধ করে রাখা মসুর ডালের সাথে পেঁয়াজ কুঁচি, কাঁচামরিচ কুঁচি, লবণ ও ঘি দিয়ে ভালোভাবে চটকিয়ে নিয়ে তৈরি করে নিন মজাদার ডাল ভর্তা। ৬. মিষ্টি কুমড়া ভর্তা উপকরণ মিষ্টি কুমড়া টুকরো করে কাটা- ২ কাপ
পেঁয়াজ কুঁচি- ২ চা চামচ
ভাজা শুকনো মরিচ- ২টি
লবণ- স্বাদ অনুযায়ী
সরিষার তেল- ২ চা চামচ প্রস্তুত প্রণালী প্রথমে মিষ্টি কুমড়া সেদ্ধ করে নিন। অনেকে ভেজে নেওয়া কুমড়া দিয়ে ভর্তা খেতে পছন্দ করেন। এরপর সেদ্ধ বা ভাজা কুমড়া পেঁয়াজ, মরিচ, লবণ ও সরিষার তেল দিয়ে মাখিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মজাদার কুমড়া ভর্তা। ৭. ১০টি ভর্তার রেসিপি এর মধ্যে ঢেঁড়স ভর্তা একটি উপকরণ ঢেঁড়স- ৫টি
কাঁচামরিচ কুঁচি- ১ চা চামচ
পেঁয়াজ কুঁচি- ২ চা চামচ
লবণ- পরিমাণমতো
সরিষার তেল- সামান্য প্রস্তুত প্রণালী প্রথমে ঢেঁড়স সেদ্ধ করে নিয়ে তাতে মরিচ, পেঁয়াজ, লবণ ও সরিষার তেল মিশিয়ে হাত দিয়েই মাখিয়ে ফেলুন। খুব সহজেই এবং অল্প সময়ে ঢেঁড়স ভর্তা তৈরি হয়ে গেলো। ৮. পটল ভর্তা উপকরণ পটল- ৫টি
রসুন কোঁয়া- ৩টি
কাঁচামরিচ কুঁচি- ৩ চা চামচ
লবণ- স্বাদ অনুযায়ী প্রস্তুত প্রণালী প্রথমে পটলগুলো ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। এবার শুকনো প্যানে টেলে নেওয়া রসুন ও মরিচের সাথে ব্লেন্ডারে অথবা পাটায় বেটে নিয়ে পটল ভর্তা বানিয়ে ফেলুন। ৯. শিম ভর্তা উপকরণ শিম- ২৫০ গ্রাম
রসুন কুঁচি- ৩ চা চামচ
কাঁচামরিচ কুঁচি- ২ চা চামচ
পেঁয়াজ কুঁচি- ৩ চা চামচ
লবণ- স্বাদ অনুযায়ী
সরিষার তেল- সামান্য প্রস্তুত প্রণালী সরিষার তেল দিয়ে শিমগুলো প্রথমে ভালোভাবে ভেজে নিন। সাথে লবণও দিয়ে দিতে হবে। এবার সেই তেলে পেঁয়াজ কুঁচি, রসুন কুঁচি ও কাঁচামরিচ কুঁচি দিয়ে দিন। সবকিছু একসাথে ভাজা হয়ে গেলে ব্লেন্ডার অথবা পাটাতে বেটে নিয়ে ভর্তা বানিয়ে নিন। ১০. কাচকি মাছ ভর্তা উপকরণ কাচকি মাছ- ১ কাপ
রসুন কুঁচি- ৩ চা চামচ
লেবুর রস- ১ চা চামচ
পেঁয়াজ কুঁচি- ৩ চা চামচ
কাঁচামরিচ কুঁচি- ২ চা চামচ
তেল- ২ চা চামচ
ধনেপাতা কুঁচি- ৪ চা চামচ প্রস্তুত প্রণালী প্রথমে কাচকি মাছ ভালো করে বেঁছে ও ধুয়ে নিন। এবার তেল গরম করে মাছগুলো ভেজে নিন। ঐ তেলে বাকি উপকরণগুলো দিয়ে দিন। সবকিছু একসাথে ভাজা ভাজা হয়ে গেলে পাটায় বেটে নিন। চাইলে হাত দিয়ে ভালোভাবে মেখেও নিতে পারেন। একটু লেবুর রস ছড়িয়ে নিলে স্বাদ আরও বেড়ে যাবে!