আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আদালতের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে যুবকের আত্মহত্যা

লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের ৫ তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে ২৭ বছর বয়সী এক যুবক।

আজ বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এসময় আদালতে উপস্থিত জনতা দৌড়ে এসে দেখেন ততক্ষণে মারা গেছেন ওই যুবক।

জানা গেছে, ওই যুবকের নাম রাকিব হোসেন রোমান (২৭)। রাকিব লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর মজুপুর এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে। পৌরসভার মোটকা মসজিদ এলাকায় বড় ভাই সোহেল হোসেনের সঙ্গে তিনি ভাঙাড়ির ব্যবসা করতেন।

আত্মহত্যার আধাঘণ্টা আগে ফেসবুকে ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিওবার্তা দেন রাকিব।  ভিডিওতে তার এ মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন বলে উল্লেখ করেন। ভুল-ত্রুটির জন্য মা-বাবার কাছে ক্ষমাও চান তিনি।

ভিডিওবার্তায় রাকিব বলেন, মা আঁই সজ্ঞানে মইরতে যাইতাছি। আঁই তামা চুরি করি ন মা। জীবনে অনেক ভুল কইরছি মা। আর মৃত্যুর লাই কেউ দায়ী নাই। আঁই নিজের ইচ্ছায় যাইতাছি মা। অনেক ভুল কইরছি মা। একটা মাইয়ার জীবনও নষ্ট কইরছি। আঁই সুমাইয়ারে বিয়া কইরছি। বিয়া করি সুখী হইতে পাইরতাছি না। আর কইলজা হাডি যা। আর অ্যাকাউন্টে ৭৫ হাজার টাকা আছে মা। বাড়ির ড্রয়ারের মধ্যে আর এটিএম কার্ড আছে’।  লাইভে ডেভিড কার্ডের পিন নম্বরও উল্লেখ করেন রাকিব।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, আদালতে যখন যে যার মতো কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ একটি শব্দ শুনতে পান লোকজন। তাৎক্ষণিক দেখতে পান জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের সামনে এক যুবক পড়ে আছেন। আদালতে উপস্থিত থাকা মানুষ জড়ো হতে থাকেন। পরে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন।

নিহত রাকিবের বড় ভাই সোহেল হোসেন জানান, পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে সকালে রাকিবকে বকাঝকা করা হয়। পরে সে দোকান থেকে অভিমান করে বের হয়ে আসেন। এরপর রাকিব আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাই।

পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক কিশোর কুমার জানান, আদালত ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই রাকিবের মৃত্যু হয়েছে। লাশ মর্গে রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি জসীম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন