বাংলাদেশ

আন্দোলনে নিহত ৭৩৭, আহত ২৩ হাজার: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৭৩৭ জন জীবন দিয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। আহতদের মধ্যে ৪০০ জন চোখ হারিয়েছেন। দুই চোখ হারিয়েছেন ২০০ জন।  বলেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।

সোমবার (৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনে ৭৩৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে এটা ভেরিফায়েড নয়। ছাত্রদের একটা তালিকা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, নিহত দেড় হাজারের বেশি। ছাত্ররা তাদের তালিকা দিলে আমরা ক্রস চেক করে দেখবো।

নুরজাহান বেগম বলেন, আগামীকাল দুই মাস পূর্ণ হবে অন্তর্বর্তী সরকারের। আমরা এতদিন কি কাজ করলাম। আমরা যখন দায়িত্ব এলাম, তখন হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ ছিল। চোখ অন্ধ হয়ে গেছে, এমন ছাত্র-জনতা আছেন। হাত-পা কেটে ফেলতে হয়েছে এমন ছাত্র-জনতা আছেন।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করলাম আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়ার। আর একটা ছিল কারা নিহত হলো, কারা আহত হলো তাদের তথ্য সংরক্ষণ করা, তৈরি করা। আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিলাম, সেই কমিটিকে কিছু নির্দেশনা দেয়া হলো। যারা আহত হলো বা নিহত হলো তাদের পরিবারকে সহায়তা করতে হবে। আমরা একটা নীতিমালা করেও দিলাম। তারা খুব শিগগির আমাদের একটা তালিকা দেবেন, তবে ওটাই সর্বশেষ তালিকা না। আজ পর্যন্ত যে তথ্য আমাদের কাছে আছে, সেখানে ৭৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এগুলো যাচাই করা হয়নি। ছাত্রদের কিছু তথ্য আছে, প্রায় ১ হাজার ৫০০ জনের ওপরে। সেইগুলো আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করছি। তাদের তালিকা আমাদের দিক। ওভারল্যাপ হতে পারে। কাজেই সেগুলো বাদ দিলে আসল তালিকা হবে।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, নিহতদের ক্ষেত্রে আমাদের বেশ বড় রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিছু কিছু আছে কেস (মামলা) করেননি, পোস্টমর্টেম হয়নি, সার্টিফিকেট পায়নি। আবার কিছু কিছু আছে যখন ভর্তি হয়েছে, তখন সত্যিকারের ঠিকানা লুকিয়েছেন। কারণ তারা ভয় পেয়েছেন, যদি ধরা পড়েন তাদের পরিবারের ওপর আক্রমণ চালাবে। কাজেই যখন মারা গেছেন, আমাদের কাছে যেই ফলস ঠিকানা ছিল সেটা নিয়েই কাজ শুরু করতে হয়েছে। আবার কারও হাত-পা কাটা গেছে। প্রথমদিকে ভালো হয়ে গেছে, চলে গেছে তারা আসল ঠিকানা দেননি।

গুরুতর আহত কতজন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে নুরজাহান বেগম বলেন, গুরুতর আহত ৭০০-৮০০ জন। তাদের মধ্যে ৪০০ জন চোখের। এর মধ্যে দুই চোখ হারিয়েছেন ৩৫ জন। অঙ্গহানি হয়েছে ২২ জনের। এর মধ্যে হাত কাটা গেছে ৩ জনের, পা কাটা গেছে ১৯ জনের। এ সংখ্যাটা আর একটু বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০০ জনের মতো। এর মধ্যে ক্রিটিক্যাল মুসা। তাকে আমরা সিঙ্গাপুর নেয়ার চিন্তা করছি। বাকিদের মধ্যে একজনের স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি আছে, তাকেও হয় তো বাইরে পাঠাতে হতে পারে। চেষ্টা করছি, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাদের সঙ্গে কনসালটেন্ট করে এখানে চিকিৎসা দিচ্ছি। আশাকরি আমরা ক্রমান্বয়ে তাকে সুস্থ করে তুলতে পারবো। সুস্থ না হলে পাঠাতে হবে।

এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন