মায়ের পরকীয়া প্রেমের বলি ছয় মাসের শিশু
কান্নার জন্য অন্তঃরঙ্গ মুহুর্তে বাঁধা পাওয়ায় নিজ সন্তানকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর পল্লবীর দিয়াবাড়ি এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারসংলগ্ন লেকপাড় থেকে শিশুর লাশ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির পল্লবী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শিশুটির মা মোসা. ফাতেমা বেগম (২৫) ও ফাতেমা বেগমের পরকীয়া প্রেমিক মো. জাফর (৩৬)।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিনগত গভীর রাতে পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, গত ৬ ডিসেম্বর বিকেলে দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ১২৪ নং পিলার সংলগ্ন লেকপাড় থেকে একটি ব্যাগের মধ্যে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। শিশুটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় পুলিশ দেখতে পায় তার গলায় সন্দেহজনক আঘাতের দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। তদন্তের একপর্যায়ে মৃত শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পুলিশ নিশ্চিত হয় শিশুটির নাম আমেনা ও তার বয়স ৬ মাস।
তদন্তের এক পর্যায়ে শিশুর মা কে সন্দেহজন আসামি হিসেবে পুলিশ আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শিশুর মা ও তার প্রেমিক শিশুকে হত্যা করে বলে স্বিকার করেন।
অভিযুক্তদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ৫ ডিসেম্বর রাত ৮টায় জাফর ফাতেমার বাসায় শারীরিক সর্ম্পকের জন্য আসে। শিশুটির কান্নাকাটির কারণে তাদের শারীরিক সর্ম্পকে ব্যাঘাত ঘটায় শিশুটিকে প্রথমে স্যুপের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে অবচেতন করা হয় এবং পরে বালিশ চাপা দিয়ে ও গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
পরে বিছানার চাদর দিয়ে শিশুটির মরদেহ মুড়িয়ে কাপড়ের একটি শপিং ব্যাগে ঢুকানো হয়। তারপর জাফর শপিং ব্যাগে করে মরদেহটি নিয়ে মেট্রোরেলের একটি পিলারের কাছে ফেলে আসে। এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গ্রেপ্তার ফাতেমা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত্ দুজনেই বিবাহিত এবং পল্লবী এলাকায় বসবাস করত। জাফর একটি গার্মেন্টসে কাজ করে। শিশুটির মা ফাতেমা আগে ওই গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে জাফরের সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। ফাতেমার স্বামী গ্রিলের মেকানিক হিসেবে কাজ করায় কর্মসূত্রে বাসার বাইরে থাকার সুযোগে তারা দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত ছিল। তাদের মধ্যে নিয়মিত শারীরিক সর্ম্পক হতো।
প্রসঙ্গত, গ্রেপ্তার জাফর ৬ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পল্লবী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
আই/এ