জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে যা বলছে জাতিসংঘের প্রতিবেদন

জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় বাংলাদেশে ১,৪০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হতে পারেন। এই সময়ে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে প্রায় ১২-১৩ শতাংশ শিশু ছিল। এছাড়া, পুলিশের ৪৪ জন কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পরিচালনা করে, যেখানে বাংলাদেশের সাবেক সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস উপাদানগুলোর পাশাপাশি পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যা, অত্যাধিক বলপ্রয়োগ, নির্বিচারে আটক, নির্যাতন এবং অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলা করা হলেও সেনাবাহিনী, র্যাব, ডিজিএফআই বা এনএসআই-এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পুলিশের ৪৫৮ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে, ৩৫ জনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ১৬৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে র্যাব, ডিজিএফআই, আনসার এবং এনএসআই-এর কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে টার্গেট কিলিং, ইচ্ছাকৃতভাবে পঙ্গু করা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং অমানুষিক নির্যাতন করেছে। নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর এসকেএস, টাইপ-৫৬ এবং বিডি-০৮ বন্দুক দিয়ে গুলি চালানোর প্রমাণও পাওয়া গেছে।
এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেছে এবং এ বিষয়ে জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এসি//এমআর