স্টারমারের ঘোষণা: ইউক্রেনে নামছে ব্রিটিশ সেনা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে! এবার সরাসরি ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের ইঙ্গিত দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। যদি কোনো শান্তি চুক্তি হয়, তাহলে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে ব্রিটেন সেনা পাঠাতে প্রস্তুত, এমনটাই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এবিসি নিউজ’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দ্য টেলিগ্রাফ-এ প্রকাশিত এক লেখায় স্টারমার জানিয়েছেন, ‘আমরা এক যুগান্তকারী সময়ের সামনে দাঁড়িয়ে। এটি শুধু ইউক্রেনের ভবিষ্যতের প্রশ্ন নয়, বরং গোটা ইউরোপের নিরাপত্তার বিষয়।’
তিনি জানান, ২০২৩ সালের পর থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে। তবে শুধু অর্থ নয়, প্রয়োজনে ব্রিটিশ সেনারাও ইউক্রেনে নামবে।
তবে স্টারমার স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘ব্রিটিশ সেনাদের ঝুঁকির মুখে ফেলা কোনো হালকা সিদ্ধান্ত নয়। কিন্তু ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মানেই ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা’
স্টারমারের এ ঘোষণা ইউরোপজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এখন পর্যন্ত ন্যাটোর অধিকাংশ দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়ে দ্বিধান্বিত। তবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং বাল্টিক দেশগুলো (এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া) ইতিমধ্যেই এ নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে।
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে আলোচনায় ইউক্রেনের ভূমিকা অনিশ্চিত, যা নিয়ে কিয়েভ উদ্বিগ্ন।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের সঙ্গে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের একটি খনিজ চুক্তির জন্য চাপ দিচ্ছে, যা দেশটির মূল্যবান দুর্লভ খনিজ সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি করবে। তবে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমাদের স্বার্থ সুরক্ষিত না হলে আমরা কোনো গোপন সমঝোতা মেনে নেব না!’
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা এনবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে কোনো চুক্তি হলে আমরা তা স্বীকার করব না। ইউক্রেন ছাড়া আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা অসম্ভব।’
জেলেনস্কি বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন।
বিশ্বজুড়ে যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কূটনৈতিক সমাধান নিয়ে আলোচনা চলছে, তখন ময়দানে সংঘর্ষ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। রোববার রাতে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, রাশিয়া একসঙ্গে ১৪৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে! যার মধ্যে ৮৩টি ধ্বংস ও ৫৯টি জ্যাম করা হয়েছে। অপরদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ৯০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
এসি//