নিউইয়র্কে সংগ্রামের দিনগুলোতে অশ্রু ঝরিয়েছি: অভিনেত্রী লতা

লুৎফুন নাহার লতা আশির দশকের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তবে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে তিনি বিনোদন জগত ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং পরবর্তী সময়ে হারিয়ে যান দেশের বিনোদন অঙ্গন থেকে। বিটিভির অনেক জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করে খ্যাতি লাভ করেন।
তার অভিনীত নাটকগুলো মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘বহুব্রীহি’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, এবং ‘চর আতরজান’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি ‘একাত্তরের লাশ’ ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন, যা তাকে প্রশংসিত করে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে টিভি নাটকের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। মঞ্চেও তার উপস্থিতি ছিল জনপ্রিয়।কিছুদিন আগে লতা বাংলাদেশে আসেন এবং এনটিভির এক সাক্ষাৎকারে জীবনের নানা সংগ্রাম ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি নিউইয়র্কে থাকার সময়কার কঠিন দিনগুলোর কথা বললেন।
তিনি জানান,নিউইয়র্কে আমি আনন্দ করতে যাইনি। সেখানে কঠিন সময় পার করেছি। এমনও সময় গেছে যে আমার ঘরে খাবারও ছিল না তবে আমি জানতাম এই কষ্ট স্থায়ী নয়,জীবন চলতে থাকবে।নারীদের জন্য তার বার্তা ছিল,মেয়েদের জীবন সত্যিই কঠিন তবে তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি তাদের মনোবল, সাহস, ও বিশ্বাস। একজন নারী যা কিছু করতে পারে, তা ২০ জন পুরুষও করতে পারে না।লতার প্রথম স্বামী নাসির উদ্দিনের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়।অনেক বছর পর তিনি মার্ক ওয়াইনবার্গ নামে একজন মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেন। যিনি একজন শিক্ষক। সাবেক স্বামীকে তিনি ক্ষমা করেছেন কিনা এমন প্রশ্নে লতা বলেন,হ্যাঁ আমি তাকে ক্ষমা করেছি। সম্পর্কের মধ্যে অনেক কষ্ট ছিল কিন্তু ক্ষমা করে দেয়া আমাকে শান্তি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তার সংগ্রামের কথা তুলে ধরে লতা জানান, আমি প্রথমে নিউইয়র্কে খুব অল্প টাকা নিয়ে গিয়েছিলাম এবং ছোট একটি বাসায় থাকতাম। সেখানে ব্যাংকে কাজ করতাম।কিন্তু সন্তানকে সময় দেওয়ার জন্য আমি স্কুলের জন্য কোর্স করেছিলাম এবং পরে পাবলিক স্কুলে কাজ শুরু করি।
জীবনের সুখ সম্পর্কে লতা বলেন,সুখ শুধু টাকা বা বড় বাড়ি নয়। সুখ হলো নিজের অর্জন এবং সন্তুষ্টি। ঢাকা ও বাংলাদেশ সম্পর্কে তার অনুভূতি ছিল,ঢাকায় আমি নিজে গাড়ি চালিয়ে টেলিভিশনে যেতাম এবং ২৫ বছর ধরে রাজশাহী, খুলনা ও ঢাকা রেডিওতে নিউজ পড়ার অভিজ্ঞতা ছিল আমার।
তিনি বলেন, বর্তমানে তার জীবনে কোনো দুঃখবোধ নেই।আমি সুখী কারণ আমি একা মা হয়ে আমার সন্তানকে বড় করেছি। আমি গর্বিত যে, আমি আমার ছেলেকে একজন সফল মানুষ ও সফল আইনজীবী হিসেবে বড় করেছি।
এসকে//