পরকীয়ায় নয়, বিচ্ছেদের রহস্য ফাঁস করলেন সালমানের সাবেক ভ্রাতৃবধূ সীমা

বলিউডের অন্যতম আলোচিত দম্পতি সোহেল খান ও সীমা সজদেহের বিচ্ছেদ নিয়ে যত আলোচনা হয়েছে , ততই সেই সম্পর্ক নতুনভাবে উন্মোচিত হয়েছে। প্রায় ২৬ বছর একসাথে থাকার পর ২০২৪ সালে তাদের সম্পর্কের ইতি ঘটে। তবে বিচ্ছেদের পেছনে পরকীয়ার মতো সহজ ও ঝলমলে কারণকে দায়ী করা যে কতটা সরলকথা, সেটি সম্প্রতি সীমা নিজেই এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন। তার মতে , বিচ্ছেদের আসল কারণ কিছুটা ভিন্ন।
সীমা সজদেহ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন , আমরা সবাই মানুষ এবং আমাদের মন একেবারেই রক্তমাংসের। বিয়ের পর অন্য কাউকে ভালো লাগা বা চিন্তা করা এটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। তবে এর মানে এই নয় যে সেটি পরকীয়া। তার কথায় সম্পর্ক সুখ না থাকা বা দূরত্বের কারণে অনেক সময় সঙ্গী খেয়ালই করে না যে , মানসিকভাবে সে অন্য কাউকে গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু এই আচরণও এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।
তাহলে প্রশ্ন আসে , যদি সম্পর্ক ভাঙতে থাকে, তবে তা কি শুধুই পরকীয়া বা শারীরিক টানাপোড়েনের কারণে? সীমা এক বাক্যে তখন উত্তর দিয়েছেন , না, পরকীয়া কখনোই মূল কারণ নয়। সম্পর্ক তখনই ভাঙে , যখন সঙ্গীর প্রতি এক ধরনের শূন্যতা অনুভূত হয় । আর তখন ছোট ছোট ভুল সিদ্ধান্ত গুলির জটিলতা সম্পর্কের ভিতকে আরও দুর্বল করে দেয়।
সীমা জানালেন , বিয়ের পর আমি অনেকটাই সোহেলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলাম। সবকিছুই যেন আমি ওর উপরে চাপিয়ে দিয়েছিলাম । নিজের স্বাধীনতাকে অনেকটাই মুছে ফেলেছিলাম। তিনি মনে করেন, অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা সম্পর্কের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি করতে পারে , যা দূরত্ব ও অবিশ্বাসের জন্ম দেয়। এই অভ্যাস অবশ্যই সঠিক ছিল না । সীমা বলেন, সম্পর্কের মধ্যে এটি এক ধরনের চাপ তৈরি করে । যার ফলে একে অপরের প্রতি স্বাভাবিক ভালবাসা আর ভালোবাসা অনুভূতি থাকে না।
এটাই মূলত দাম্পত্য জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। সীমা নিজেই জানিয়েছেন, একটি সম্পর্কের সঠিক সুর বজায় রাখা অনেক কঠিন । বিশেষ করে যখন একে অপরের উপর নির্ভরশীলতা অতিরিক্ত বেড়ে যায় । একবার যদি সম্পর্কের সুর ভেঙে যায় সেটি আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
সীমা আরও জানিয়েছেন , এই বিচ্ছেদের পিছনে পরকীয়া বা অন্য কোনো 'সেন্সেশনাল' কারণ খুঁজতে গেলে ভুল হবে। সীমার মতে , সম্পর্ক ভাঙে যখন একে অপরের মধ্যে বিশ্বাস এবং সম্পর্কের গভীরতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দাম্পত্য জীবনে একে অপরের মধ্যে শান্তি, সমঝোতা, এবং সুখের সুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একবার যদি তা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় , তবে সেটা শুধু দাম্পত্য সম্পর্ক নয় বরং , জীবনের একটি বড় অংশ হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি আরও বলেন , সঠিক সময়ে যদি আমরা নিজের ভুলগুলো চিনে নিতে না পারি। সম্পর্কের অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলোর প্রতি যদি অবজ্ঞা করি, তাহলে একসময় তার কুফল আমাদের জীবনের অন্য দিকগুলোতেও প্রভাব ফেলতে শুরু করে। সন্তানদের দিকে তার দৃষ্টি ফিরে আসে, এটি কখনোই কাম্য নয় । তাদের ওপর তিক্ততার কোনও প্রভাব পড়ুক, তা আমরা কেউ চাই না।
এসকে//