আন্তর্জাতিক

ভারত-পাকিস্তানের রহস্যময় পরমাণু নীতি

ছবি: সংগৃহীত

এশিয়ার দুই প্রতিবেশী শক্তিশালী দেশ—ভারত আর পাকিস্তান। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মিল হলো—দুদেশের কাছেই আছে ভয়ঙ্কর পারমাণবিক অস্ত্র। ৩৫০-টিরও বেশি পরমাণু বোমা একে অপরের দিকে তাক করে রাখা।

ভারতের কাছে আনুমানিক ১৮০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। মাটি থেকে আকাশ, এমনকি সমুদ্রের গহীন থেকেও ছোড়া যায় এসব পরমানু অস্ত্র। পাকিস্তানও কম যায় না, ১৭০টির বেশি পারমাণবিক ওয়ারহেড প্রস্তুত রেখেছে তারা। ভারতের যেকোনো বড় শহরকে মুহূর্তে মাটিতে মিশিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে এসব পরমানু অস্ত্র। 

এই অস্ত্র কি কেবল শীতল যুদ্ধের প্রদর্শনী? নাকি বাস্তবে কখনো এর ব্যবহার হবে?

ভারতের পারমাণবিক নীতি ‘নো ফার্স্ট ইউজ’। অর্থাৎ প্রথমে কখনো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না, তবে আক্রান্ত হলে প্রতিশোধ হবে ধ্বংসাত্মক। অর্থাৎ তাদের নীতি হচ্ছে ডিটারেন্স বা প্রতিরোধ শক্তি। কিন্তু প্রতিশোধ? সেটা হবে সর্বনাশী।

ভারতের পারমাণবিক নীতি ২০০৩ সালে নির্ধারিত হয়।  এটি চারটি মূল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে। যেমন ভারত কখনো প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না।  ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র কেবল আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহৃত হবে, আক্রমণ চালানোর উদ্দেশ্যে নয়। ভারতের ওপর পারমাণবিক হামলা হলে, ভারতের প্রতিশোধ হবে ভয়ঙ্কর এবং শত্রুপক্ষের সামরিক শক্তি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। সব শেষ যদি ভারতের ওপর রাসায়নিক বা জীবাণু অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়, তখন ভারত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে।

২০১৯ সালে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতি অটল থাকবে কিনা, সেটা ভবিষ্যতের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। 

অন্যদিকে পাকিস্তান রহস্যের আবরণে ঢাকা। কবে, কখন, কিভাবে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে, কেউ জানে না। শুধু জানে ওদের হাতে আছে ট্যাকটিক্যাল নিউক্লিয়ার ওয়েপন। সীমান্তে যে কোনো মুহূর্তে তা বিস্ফোরিত হতে পারে। ট্যাকটিক্যাল নিউক্লিয়ার ওয়েপন দেখতে ছোট হলেও এর ধ্বংসক্ষমতা ভয়াবহ। হিরোশিমার অ্যাটম বোমার চেয়ে অনেক গুণ বেশি।

২০০১ সালে পাকিস্তানের শীর্ষ জেনারেল খালিদ কিদওয়াই চারটি ট্রিগারের কথা বলেছিলেন, যেমন, বড় এলাকা হারালে, সেনাবাহিনীর বড় ক্ষতি হলে, অর্থনীতিতে ভয়াবহ আঘাত এলে কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পথ খুলে যেতে পারে।

২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলার পর থেকে উত্তেজনা সর্বোচ্চ সীমায়। ১০ মে’র প্রথম প্রহরে পাকিস্তান দাবি করে ভারত তাদের তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা করেছে। জবাবে পাকিস্তান বলে—তারাও সাতটি ভারতীয় ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা করেছে। 

 

সূত্র: আল জাজিরা

 

এসি//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন