আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

‘অপরাজিতা’ হয়েই বেঁচে থাকুক শিশুটি

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় রাস্তায় জন্ম নেয়া মানসিক ভারসাম্যহীন আফরোজা বেগম (৩২) শিশুকন্যার নাম রাখা হলো ‘অপরাজিতা। মানসিক ভারসাম্যহীন মা ও শিশু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা সুস্থ আছে।

বৃহস্পতিবার (১০জুন) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মানসিক ভারসাম্যহীন আফরোজা গত ৩১ মে সকালে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মাতব্বর বাজারের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। অথচ এই কন্যা সন্তানটির বাবা কে আফরোজা নিজেও জানেন না।

গেলো ৩০ মে রাতে রাজাপুর গ্রামের মাতব্বর বাজারে কাছে রাস্তায় বসেই আফরোজার প্রসব বেদনা ওঠে।  জন্ম দেন কন্যাসন্তানের। সারা রাত আফরোজাসহ তার সন্তানটি রাস্তায়ই পড়েছিল। পরের দিন সকালে ওই এলাকার কয়েকজন নারী আফরোজা ও তার কন্যা সন্তানকে রাস্তা থেকে তুলে বাজারের একটি টংঘরে নিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন।

একজন সংবাদকর্মীর মাধ্যমে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে মা ও নবজাতককে উদ্ধার করে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এসএম সায়েমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে মানসিক ভারসাম্যহীন আফরোজা ও তার নবজাতকের। ৯দিন পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন মা ও নবজাতক।

ডা. এসএম সায়েম জানান, মা ও নবজাতক আগের তুলনায় অনেক ভালো। মা স্বাভাবিক কথাবার্তা বললেও মাঝে মাঝে এলোমেলো কথাবার্তা বলেন। নবজাতকের কোনো অভিভাবক না থাকায় ওই চিকিৎসক তার নাম রাখেন অপরাজিতা।

তিনি আরও জানান, ওই মানুষিক ভারসাম্যহীন মা জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। লিগ্যাল কোনো অবিভাবক না থাকায় তিনি কন্যা সন্তানের নাম রেখেন ‘অপরাজিতা’। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যান্য চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা শিশুটিকে অপরাজিতা নামেই ডাকেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, যেহেতু তার লিগ্যাল কোনো অভিভাবক নেই। তাই আমরা যতো দিন পর্যন্ত ওই নবজাতককে কেউ দত্তক না নিচ্ছে; ততোদিন মা ও শিশুটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারও আমাকে তাই বলেছেন। কেউ নবজাতককে দত্তক নিতে চাইলে তাকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, ভাবতেই ভালো লাগছে। নবজাতক ও তার মা সুস্থ আছেন। তাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি। তবে ওই নবজাতকের কোনো দাবিদার না থাকায় আমরা পরবর্তী করণীয় নিয়ে ভাবছি। কেউ কন্যা সন্তানটিকে দত্তক নিতে চাইলে আমারা আইনি প্রক্রিয়া তার কাছে হস্তান্তর করবো।

মুক্তা

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন