আর্কাইভ থেকে এশিয়া

চীনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সাইবার চরবৃত্তির অভিযোগ

বড় ধরনের গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে চীনের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্র-সমর্থিত হ্যাকারদের মাধ্যমে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলোর কম্পিউটারে ঢুকতে ইন্টারনেট সুরক্ষা বাড়াতে পারার মতো ডিভাইস ব্যবহার করছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এপির উদ্বৃতি দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দি ইনডিপেন্ডেন্ট।

গেল এপ্রিলে চীনের পালস কানেক্ট সিকিউর নেটিওয়ার্কিং ডিভাইস হ্যাকের বিষয়টি প্রকাশ্যে এলেও বর্তমানে এর কার্যক্রম স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সংবাদমাধ্যম এপি জানায়, টেলিকমিউনিকেশন জায়ান্ট ভেরিজন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম পানি এজেন্সিকে নিশানা করেছিল হ্যাকাররা। এছাড়া নিউইয়র্ক সিটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম পাতাল রেল ব্যবস্থাও হ্যাকারদের কবলে পড়েছে বলে খবর ছড়িয়েছে।

নিরাপত্তা গবেষকেরা জানায়, খুবই মূল্যবান কয়েক ডজন সংস্থাকে টার্গেট করা হয়েছিল। যাদের নাম নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকাশ করা হয়নি। পালস সিকিউর বিভিন্ন কোম্পানি ও সরকার নিজেদের নেটওয়ার্কের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করে থাকে।

কোন সংবেদনশীল তথ্য হ্যাকারদের হাতে পড়েছে বা আদৌ এসব তথ্য হ্যাকাররা হাতে পেয়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়। যারা গুপ্তরচরবৃত্তির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল তাদের কেউ কেউ বলেছে, কোনো ডেটা চুরির প্রমাণ দেখতে পাওয়া যায়নি। এ ধরনের অনিশ্চয়তা সাইবার গুপ্তচরবৃত্তিতে সাধারণ বিষয়। তবে ডেটা চুরির বিষয়টি ধরা পড়ত, কখনও কখনও ধরা পড়েও না এবং এতে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।

এদিকে, কোন গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি পালস কানেক্ট সিকিউরের উটাহ ভিত্তিক মালিক ইভান্তি। সংবেদনশীল তথ্য হ্যাক না হলেও উদ্বেগজনক বিষয়টি হলো, হ্যাকাররা এমন সব গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় হানা দিতে পেরেছে যেগুলো বাণিজ্যিক বা জাতীয় নিরাপত্তার কারণে চীনের আগ্রহের জায়গা।

মার্কিন সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ম্যানডিয়ান্ট এর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা চার্লস কার্মাকাল বলেছেন, সাইবার হুমকিদাতারা কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় ও সুরক্ষিত সংস্থায় হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছিল। গেল এপ্রিলে প্রথম হ্যাকিংয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে চার্লস কার্মাকালের ম্যানডিয়ান্টই।

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান জ্বালানি পাইপ লাইনসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো র‍্যানসামওয়্যার হামলার শিকার হওয়ার খবর গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়। তবে পালস সিকিউরের হ্যাকিংয়ের বিষয়টি তেমন কারও নজরে আসেনি। এছাড়া রাশিয়ার সাইবার গুপ্তরচরদের সোলারউইন্ডস হ্যাকিং ক্যাম্পেইনের বিষয়ে এখনও অনুসন্ধান করছে মার্কিন সরকার। রাশিয়ার ক্যাম্পেইনটি কয়েক ডজন মার্কিন ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি, গবেষণা সংস্থা এবং নয়টি সরকারি সংস্থায় সাইবার হানা দিয়েছিল।

মার্কিন ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স দপ্তরের পরিচালক বলেছেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে গুপ্তরচরবৃত্তি করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে চীনের। ছয় বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব পারসোনেল ম্যানেজমেন্ট থেকে কর্মচারীদের লাখ লাখ ব্যক্তিগত তথ্যের নথি চুরি করে চীনা হ্যাকাররা।

তবে, পালস হ্যাকিং ক্যাম্পেইনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে চীন। এ ব্যাপারে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেয়নি মার্কিন সরকার।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন