ছিনতাইয়ের নাটক অতঃপর ফেঁসে গেলেন দুই বন্ধু
বগুড়ার নন্দীগ্রামে ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজানোর ঘটনায় দুই বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ।
গেলো বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) তাদেরকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে শুক্রবার থানায় মামলা দায়ের করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার ষাঁড়বুরুজ গ্রামের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলী।
আটককৃতরা হলেন- উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে জিয়াউল হক জিয়া (৩৩) ও বেলঘড়িয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (৩০)।
আজ শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে নন্দীগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলীর সঙ্গে নন্দীগ্রামের জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানার দীর্ঘদিনের ধান ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা নিয়ে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ উপজেলা থেকে ধান ক্রয় করে তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে সরবরাহ করতেন। ব্যবসার লেনদেনের টাকা সোহেল রানার ইসলামী ব্যাংক নন্দীগ্রাম শাখার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হতো। এ নিয়ে দুই বন্ধু জিয়াউল হক ও সোহেল রানা মিনার আলীর টাকা আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করেন। একপর্যায়ে গত বুধবার ধান ব্যবসায়ী মিনার আলীর কথা মতো এরোমেটিক এগ্রো অ্যান্ড ফুড লিমিটেডের মালিক ২১ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন সোহেলের অ্যাকাউন্টে।
এদিকে মিনারের কথা মতো ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা দুটি অ্যাকাউন্টে পাঠান সোহেল। ধান ক্রয়ের জন্য বাকি ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যান জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানা। ওই দিন সন্ধ্যায় মিনারকে ফোন করে সোহেল জানান, ব্যাংক থেকে ফেরার পথে টাকাগুলো ছিনতাই হয়ে গেছে। ভাটরা ইউনিয়নের মকবুল মেম্বার থানায় ফোন করে জানান, উপজেলার সিমলা বাজার থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে ঢাকারগাড়ী ব্রিজ এলাকায় তার ছেলের ব্যবসায়ী পার্টনার জিয়াউল হক ডাকাতির কবলে পড়েছে এবং টাকাগুলো নিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি চৌকস টিম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সাজানো নাটক বলে সন্দেহ হয়। টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে বুধবার রাতেই থানায় আসে বেলঘড়িয়া গ্রামের জিয়াউল হক ও সোহেল। তারা জানান, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে জিয়াউল হক জিয়া মোটরসাইকেল যোগে ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তার পথরোধ করে টাকার ব্যাগ ছিনতাই করা হয়। তবে জিয়া ও সোহেল ভেবেছিল, থানায় অভিযোগ করলেই পুলিশ তাদেরকে সন্দেহ করবে না। পৌরসভার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন হয়। তাদের দুইজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পৌরসভার ওমরপুর এলাকার জনৈক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকি এক লাখ টাকা এখনো উদ্ধার হয়নি।