আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বিমানের ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক

মিশর থেকে দুটি বোয়িং লিজ নেয়ার ঘটনায় সংস্থাটির পরিচালকসহ ২৩ কর্মকর্তার যোগসাজশের প্রমাণ পেয়ে মামলা করেছে দুদক। আবারও সামনে এলো বিমান কর্মকর্তাদের অনিয়ম। আর এর নেপথ্যে ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে লিজ নেয়া দুটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সচিব মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে শিগগির মামলাটি দায়ের করবে বলে জানা গেছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসেছে যে টেন্ডার প্রক্রিয়ায়ও অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। যদি কর্মাশিয়াল সেটেলমেন্টের মাধ্যমে উড়োজাহাজগুলো ফেরত দেয়া যেত তাহলে ক্ষয়-ক্ষতি এড়ানো যেত।

এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বিমানের ফ্লাইট অপারেশন এর পরিচালক ইশরাত আহমেদ, জিএম আবদুর রহমান ফারুকী এবং প্রধান প্রকৌশলী কায়সার জামানসহ অভিযুক্ত ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মামলা করেছে দুদক।

মামলার নথি বলছে, ব্যক্তিগত লাভের জন্যই রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছেন এই কর্মকর্তারা।

সচিব আরও বলেন, পূর্বপরিকল্পতিভাবে পরস্পর যোগসাসজশ করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মোট ১ হাজার ১৬৮ টাকা ক্ষতিসাধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিস্তারিত অনুসন্ধান শেষে আজকে সোমবার মিশরীয় বিমান লিজ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়। বহরের ২১টি ঊড়োজাহাজের ১৮টিই নিজেদের, মাত্র তিনটি চলে লীজে। এমন আত্মতৃপ্তিতে বিভোর বাংলাদেশ বিমান। যদিও পদে পদে অব্যবস্থাপনা আর দুর্নীতি থেকে আজো বের হতে পারেনি সংস্থাটি।

দুদক অনুমোদিত মামলার আসামিরা হলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ফ্লাইট অপারেশনের সাবেক পরিচালক ক্যাপ্টেন ইনরাত আহমেদ, সাবেক ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল আলম সিদ্দিক (এস এ সিদ্দিক), মহা ব্যবস্থাপক (মুদ্রণও প্রকাশনা) আবদুর রহমান ফারুকী, সার্ভিসেস অ্যান্ড অডিটের সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার (এমসিসিঅ্যান্ডএলএম) দেবেশ চৌধুরী, ক্যাবের কনসালটেন্ট গোলাম সারওয়ার ও ক্যাবের প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঞা, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ডিজিএম কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী এ আর এম কায়সার জামান, শরীফ রুহুল কুদ্দুস (প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জি (স্ট্রাকচার), ক্যাপ্টেন মো. নজরুল ইসলাম শামিম, উপ মহাব্যবস্থাপক (এওসি, এসিপি) জিয়া আহমেদ, চিফ পার্সার (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী মোসাদ্দেক আলী, ফ্লাইটপার্সার মো. শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আজাদ রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাদির, সাবেক উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, সাবেক ইঞ্জিনিয়ার অফিসার মো. জাহিদ হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র কয়েকটি ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। যেটি সচল করতে মিশর থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি উড়োজাহাজ, দেড় বছরের মাথায় বিকল হয়ে যায় সেটিও। বছরের পর বছর বসিয়ে রেখে উড়োজাহাজ দুটির পেছনে বিমানের ব্যয় বিশাল অংকের অর্থ। এছাড়াও মেটাতে হয়েছে ভাড়ার টাকা আর রক্ষণাবেক্ষণের দায়। আর এসব কিছুই হয়েছে বিমানের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে, এমন প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

এএম

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন