আর্কাইভ থেকে আফ্রিকা

ইথিওপিয়ায় মৃত্যু ঝুঁকিতে এক লাখের বেশি শিশু

ইথিওপিয়ায় মৃত্যু ঝুঁকিতে এক লাখের বেশি শিশু

ইথিওপিয়ার সংঘাত কবলিত টাইগ্রে অঞ্চলে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে এক লাখের বেশি শিশু। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই অঞ্চলের লক্ষাধিক শিশু খাদ্যাভাব ও পুষ্টিহীনতায় আগামী এক বছরের মধ্যে মারা যেতে পারে। জরুরি সহায়তা না পাঠালে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে টাইগ্রের লাখ লাখ মানুষ।

একটু খাবারের আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে সংঘাতময় টাইগ্রে অঞ্চলের বাসিন্দারা। তবে খাবার জুটবে কিনা সেই নিশ্চয়তাটুকুও নেই তাদের। ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনী এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী টিপিএলএ’র মধ্যে সংঘাতের কারণে বাড়িঘর ছেড়ে পালানো মানুষের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ইউনিসেফ জানায়, দিনে একবেলাও ঠিক মতো খাবার পাচ্ছে না সেখানকার মানুষগুলো। এলাকাটি বিদ্রোহীদের দখলে যাওয়ার অজুহাতে উল্টো সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। মায়েরা খাবার না পাওয়ায় পুষ্টিহীনতায় ভুগছে সেখানকার লাখ লাখ শিশু।

টাইগ্রেতে অবস্থানরত ইউনিসেফের মুখপাত্র মারিক্সি মারকাডো জানান, টাইগ্রে অঞ্চলে গেল কয়েক মাসের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। সংঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে শিশুরা। বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়া এই শিশুদের বাবা-মায়েদের কর্মসংস্থানের কোন সুযোগ নেই। খাবারের অভাবে পুষ্টিহীনতায় মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে এক লাখের বেশি শিশু। আর যারা বেঁচে থাকবে তারাও ভুগবে নানা শারীরিক জটিলতায়। বছর শেষে হয়তো আরও বাড়বে এই সংখ্যা।

ইউনিসেফ আরো জানায়, পেট ভরে খাওয়া তো দূর, সেখানে নেই প্রয়োজনীয় নূন্যতম পানির ব্যবস্থা। শারীরিক কষ্টের পাশাপাশি অবর্ণনীয় মানসিক নির্যাতনের শিকার নারীরা। কেউ কেউ গণধর্ষণেরও শিকার হয়েছে।

বাস্তচ্যুত এসব মানুষের চিকিৎসাসহ কিছু প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। তবে তা চাহিদার তুলনায় খুবই নগণ্য। তাই মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে অঞ্চলটিতে দ্রুত সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র টমসন ফিরি বলেন, দুই সপ্তাহ আগে অঞ্চলটি পরিদর্শন করেছে আমাদের কর্মীরা। সেখানে দুইশ’ ট্রাক খাদ্য সহায়তা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ দিয়ে কিছুই হবে না। সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন অন্তত একশ ট্রাক খাদ্য সহায়তা। এই বিপর্যয় ঠেকাতে চাইলে আজ থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।

তবে আশঙ্কা হলো, পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে দাতব্য সংস্থাগুলো ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার তাগিদ দিলেও বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাটিতে কোন ত্রাণ সহায়তা পাঠাননি ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যাবে আহমেদ।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ইথিওপিয়ায় | মৃত্যু | ঝুঁকিতে | এক | লাখের | বেশি | শিশু