শিশুরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তাদের সঠিক যত্ন নেয়া আমাদের সবার দায়িত্ব। বিশেষ করে তাদের ত্বক যা খুবই সংবেদনশীল। কিন্তু অনেক সময় আমরা মনের অজান্তেই কিছু ভুল করি যা শিশুর কোমল ত্বকের ক্ষতি করে। তাই শিশুর ত্বকের যত্নে কোন কোন ভুল করা উচিত নয়, তা জানা জরুরি।
চলুন, আজ জেনে নিই সেই ৫টি ভুল যা এড়িয়ে চলা উচিত শিশুর ত্বকের যত্নে।
১.বড়দের ময়শ্চারাইজার বা তেল ব্যবহার শিশুর ত্বক বড়দের ত্বকের মতো নয়, তাই তাদের ময়শ্চারাইজার বা তেল কখনওই শিশুর ত্বকে ব্যবহার করা উচিত নয়। বড়দের প্রসাধনীতে এমন রাসায়নিক থাকতে পারে যা শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। বাজার থেকে ক্রিম বা তেল কেনার আগে ভালোভাবে দেখে নিতে হবে, যাতে এতে প্যারাবেন, থ্যালেট, বা রঞ্জকজাতীয় ক্ষতিকর উপাদান না থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা।
২.সানস্ক্রিন ছাড়া বাইরে নেয়া অনেকেই মনে করেন শিশুদের সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই, কিন্তু এটি একটি বড় ভুল। যখন শিশুকে বাইরে নেয়া হবে, তখন অবশ্যই এসপিএফ ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন লাগানো উচিত। তবে ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে সানস্ক্রিন লাগানো উচিত নয়। এমন অবস্থায়, শিশুকে সরাসরি রোদে না নিয়ে বরং হালকা সুতির জামা পরিয়ে বের করা উচিত।
৩. অনেক বাবা-মা মনে করেন গরম পানিতে গোসল করানো শিশুর ত্বকের জন্য ভালো। কিন্তু বারবার গরম পানিতে গোসল করালে শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। প্রতিদিন গরম পানিতে গোসল করানোর দরকার নেই। দিনে একবার ঠান্ডা বা কুসুম গরম পানিতেই গোসল যথেষ্ট।
৪.বাজারচলতি সুগন্ধী তেল দিয়ে তেল মালিশ করা শিশুকে নিয়মিত তেল মালিশ করা দরকার, তবে তা হওয়া উচিত নিরাপদ ও প্রাকৃতিক তেল দিয়ে। নারকেল তেল শিশুর ত্বকের জন্য বেশ ভালো। অনেকে সর্ষের তেল বা অলিভ তেল ব্যবহার করেন, তবে খাঁটি তেল পাওয়া কঠিন, আর এসব তেলে থাকা কিছু উপাদান শিশুর ত্বকে অ্যালার্জি বা র্যাশ সৃষ্টি করতে পারে। তাই যেকোনো তেল ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৫.সুগন্ধী বা ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা শিশুর ত্বকে কখনও সুগন্ধী বা ডিওডোরেন্ট লাগানো উচিত নয়। এই ধরনের পণ্যগুলিতে থাকা রাসায়নিক শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে না, বরং ত্বকে র্যাশ বা একজিমার মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। শিশুর কোমল ত্বকের জন্য এগুলো একেবারেই নিরাপদ নয়।
শিশুর ত্বকের যত্নে ছোট ছোট ভুল থেকে অনেক বড় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই এই পাঁচটি সাধারণ ভুল এড়িয়ে চললে, শিশুর ত্বক থাকবে কোমল ও সুস্থ। মনে রাখবেন, শিশুর ত্বক খুবই স্পর্শকাতর, তাই সব সময় প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ পণ্য ব্যবহারের চেষ্টা করুন।
জেডএস/