চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানার হামিদচর এলাকার কর্ণফুলী নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে গাঙ্গেয় ডলফিনের ছোট একটি বাচ্চার মৃতদেহ। বাচ্চাটির বয়স আনুমানিক এক বছর, দৈর্ঘ্য ৩ ফুট ৫ ইঞ্চি।
ডলফিনের বাচ্চাটি উদ্ধারের সময় চট্টগ্রাম বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জারর মো. ইসমাইল হোসেন ও বন বিভাগ কর্মী অজয় দেব উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিসার্চ কেন্দ্রের সমন্ধয়ক মনজুরুল কিবরিয়া জানান, ডলফিনের বাচ্চাটির দেহে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালে আটকে ডলফিনটি মারা গেছে।
ডলফিনটি সংরক্ষণের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৫ জুলাই বোয়ালখালীর পূর্ব গোমদন্ডী এলাকায় আর একটি পূর্ন বয়স্ক ডলফিনের মৃত দেহ পাওয়া গেছে।যেটি আঘাত পেয়ে মারা গিয়েছিল বলে জানায় প্রানীবিদরা।
২০১৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত হালদা নদীর বিভিন্ন অংশে ২৯টি মৃত ডলফিনের পাওয়া গেছে।২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত হালদায় পাওয়া ২৯টি মৃত ডলফিনের মধ্যে সাতটিতে কোনো আঘাতের চিহ্ন পায়নি হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরি। সেগুলোর ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’হয়েছে বলেই তারা ধরে নিয়েছেন।
বাকিগুলোর মধ্যে একটি চর্বি চুরির জন্য হত্যা করা হয়েছিল। তিনটি নদীতে বসানো জালে আটকে এবং অন্যগুলো নৌযানের ধাক্কায় আঘাত পেয়ে মারা যায় বলে ধারণা গবেষকদের।
ডলফিনের চামড়া থেকে তেল উৎপাদন করা হয়। ডলফিন ধরা পড়লে জেলেরা সেই ডলফিনের চামড়া কেটে বিভিন্ন পাত্রে রাখে। কয়েকদিন পর সেই চামড়া পঁচে তেল তৈরি হয়। পরে জেলেরা ওই তেল জ্বালানী কাঠের কয়লার সঙ্গে মিশিয়ে নদীতে ছিটিয়ে দেয়। এতে করে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে।
এ ছাড়া অনেক গ্রাম্য কবিরাজও এসব ডলফিন উচ্চ মূল্যে ক্রয় করেন। পরে তারা তেল তৈরি করে সেই তেল বাজারে বিক্রি করেন, যা প্রতি কেজি ৪০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।
উল্লেখ্য, মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ অনুযায়ী যে সকল মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে সেখানে ডলফিন বা শুশুক সংরক্ষণের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনার উল্লেখ নেই।
মুক্তা মাহমুদ