যাত্রীবাহি বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে ২০টি সোনার বার ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের মধুখালীতে। ওই স্বর্ণের মূল্য ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের কামারখালী সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতে মধুখালী থানায় একটি মামলা করেন যাত্রী রাসেল মিয়া।
ছিনতাইয়ের শিকার রাসেল মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, ঢাকার তাঁতীবাজারে নিলখী বুলিয়ন স্টোর এবং ঢাকার উত্তরায় নিউ মা-মনি জুয়েলার্স নামে তার দু’টি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। তিনি গয়না বানানোর জন্য চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত করেন।
পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত সন্দেহে রইচ মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
রইচ মিয়া মধুখালীর পশ্চিম আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কামারখালী সেতুর টোল প্লাজায় কাজ করেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাসেল মিয়া সকাল পৌনে সাতটার দিকে ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার বড় বাজারে যাওয়ার জন্য বরিশালগামী সাকুরা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। এ সময় তার সাথে স্বর্ণের বারগুলো ছিল। সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান। সেখান থেকে খান পরিবহনের একটি বাসে করে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা দেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খান পরিবহনের বাসটি মধুখালী উপজেলার পশ্চিম আড়পাড়া এলাকার কামারখালী গড়াই সেতুর টোল প্লাজায় পৌঁছায়। টোল পরিশোধের জন্য বাসটি থামলে আট-নয়জনের একটি দল মোটরসাইকেল সামনে থামিয়ে বাসটি আটকান। এরপর তারা বাসের ভেতরে উঠে ওই ব্যবসায়ীকে শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে নিচে নামান। তিনি প্রতিবাদ করলে আসামিরা তাকে কিল ঘুষি মারেন এবং ভয়ভীতি দেখান। পরে আসামিরা তাকে সড়কের পাশে থাকা একটি করাতকলের মালিকের (জুয়েল খান) বাড়ির ভেতরে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা ২০টি স্বর্ণের বার ছিনিয়ে নেয়। যার মোট ওজন ২ কেজি ৩৩২ গ্রাম। পরে আসামিদের মধ্যে একজন স্বর্ণের বারগুলো নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে মাগুরার দিকে চলে যান।
ফরিদপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, এই ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে মধুখালী থানায় একটি মামলা করেছেন। ইতোমধ্যেই পুলিশ উপজেলার পশ্চিম আড়পাড়া গ্রাম থেকে রইচ মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার বিকেলে সে আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। লুটের ঘটনায় জড়িত অন্য সদস্যদের ধরতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।