গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে আরও ১৩ জন মারা গেছেন।চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে তারা মারা যান। এর মধ্যে করোনায় পাঁচজন, উপসর্গ নিয়ে সাতজন এবং করোনা নেগেটিভ হয়েও একজন মারা গেছেন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে রাজশাহীর দুজন, পাবনার দুজন এবং নাটোরের একজন প্রাণ হারিয়েছেন। করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন রাজশাহীর পাঁচজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন এবং পাবনার একজন। করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় রাজশাহী জেলার আরও একজন মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিনজন করে মারা গেছেন হাসপাতালের ২৯/৩০ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) দুজন, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন এবং ১৪, ১৫ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।
পরিচালক আরও জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৩২৫ জন। এক দিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ৩৪২।
বর্তমানে রাজশাহীর ১৪৮ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৪ জন, নাটোরের ৫২ জন, নওগাঁর ৩১ জন, পাবনার ৪৬ জন, কুষ্টিয়ার সাতজন, চুয়াডাঙ্গার তিনজন, জয়পুরহাটের একজন, সিরাজগঞ্জের একজন, মেহেরপুরের একজন এবং বগুড়ার একজন রয়েছেন।
হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৭৯ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৮৭ জন। করোনা ধরা পড়েনি ভর্তি ৫৯ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪০ জন। এই একদিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৪ জন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ৫৭ জনের নমুনায়।
একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৩৭৩ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬২ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ২৫ দশমিক ১৫ শতাংশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২২ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং নাটোরের ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৯২ জন। এর মধ্যে করোনায় ৭০ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ৯৭ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন।
এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।
মুক্তা মাহমুদ