গেল ছয় মাসে ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু ও শক্তিশালী মাউন্ট এটনা আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্বের জ্বালামুখের উচ্চতা এক লাফে বেড়েছে ১০০ ফুট বা ৩০ মিটার। সেই অভূতপূর্ব ঘটনার ছবি পাঠিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এসার কয়েকটি উপগ্রহ।
এই খবর দিয়েছে ইতালির সিসিলি দ্বীপের ক্যাটানিয়ায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর জিওফিজিক্স অ্যান্ড ভলক্যানোলজি-আইএনজিভি।
উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, মাউন্ট এটনা আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্বের জ্বালামুখ বা গহ্বরের উচ্চতা ১৬ ফেব্রুয়ারির পর থেকে একলাফে ১০০ ফুট বেড়ে গেছে। গড় উচ্চতার প্রায় ২০ জন একে অন্যের উপর দাঁড়ালে যতটা উঁচু হয়, প্রায় ততটা!
একটি বিবৃতিতে আইএনজিভি জানিয়েছে, গেল ১৩ এবং ২৫ জুলাই বিভিন্ন উপগ্রহের পাঠানো ছবিতে ধরা পড়েছে এখন মাউন্ট এটনা আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্বের জ্বালামুখ বা গহ্বরের উচ্চতা পৌঁছেছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১ হাজার ১৩ ফুট বা ৩ হাজার ৩৫৭ মিটার উপরে। তবে উচ্চতা বৃদ্ধির এই হিসেবে বড়জোর ১০ ফুটের এদিক ওদিক হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু ও শক্তিশালী আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনার হুড়মুড়িয়ে উপরে উঠার কারণ;
আইএনজিভি জানিয়েছে, উপগ্রহগুলোর পাঠানো তথ্য বলছে, মাউন্ট এটনা আগ্নেয়গিরিতে ফেব্রুয়ারির ১৬ তারিখে থেকে গেল ছয় মাসে ৫০টির বেশি বিস্ফোরণ হয়েছে। বেরিয়ে এসেছে গনগনে লাভা স্রোত।
এর ফলে মাউন্ট এটনার উত্তর-পূর্বের যে জ্বালামুখ বা গহ্বরটি এত দিন সর্বোচ্চ ছিল সেই বিগ ব্রাদারকেও ছাপিয়ে গেছে আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্বের জ্বালামুখ বা গহ্বরটির উচ্চতা।
মাউন্ট এটনার ইতিহাস বলছে, ১৯৮০-১৯৮১ সালে বিস্ফোরণের পর এই আগ্নেয়গিরির উত্তর-পূর্বের জ্বালামুখ বা গহ্বরটির উচ্চতা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৯৯০ ফুট বা তিন হাজার ৩৫০ মিটারে। তবে সেই গহ্বরের আশপাশের দেয়ালগুলো ধসে যাওয়ায় পরের দশকগুলোতে উচ্চতা কিছুটা কমে যায় আগ্নেয়গিরির উত্তর-পূর্বের জ্বালামুখ বা গহ্বরের। উচ্চতা কমে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৯১২ ফুট বা তিন হাজার ৩২৬ মিটার।
তবে, দক্ষিণ-পূর্বের গহ্বরের ক্ষেত্রেও তা হবে কিনা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ এখনও লাভাস্রোত বেরিয়ে চলেছে। ফলে ওই গহ্বরের ধারগুলো এখনই বসে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এসএন