আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

গাড়ল পালনে ভাগ্য বদলেছে সবুজের

গাড়ল পালনে ভাগ্য বদলেছে সবুজের

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গাড়ল পালন। ভেড়ার একটি উন্নত প্রজাতির নাম গাড়ল। এগুলো দেখতে প্রায় ভেড়ার মতো। কিন্তু ভেড়া নয় এগুলো গাড়ল। দেশি ভেড়ার থেকে এটি আকারে বড় মাংসও বেশি হয়। মাংসের এসব চাহিদা মেটাতে দেশেই এখন বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে গাড়লের খামার। এই খামারে পালন করা হচ্ছে গাড়লের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার ছাগল। কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের।

একটি গাড়ল থেকে মাংস পাওয়া যায় ৪০ থেকে ৫০ কেজি। বছরের ছয় থেকে সাতটি বাচ্চা দেয় গাড়ল। ভেড়ার এই মাংস খুব সুস্বাদু। ২০১৯ সালে ১০টি গাড়ল ১৫টি ছাগল নিয়ে সবুজ এগ্রোফার্মের যাত্রা শুরু করেন দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ইসলামপাড়া গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক শাহিনুর রহমান সবুজ। বর্তমানে এই খামারে ১১০টি ভুটান ও ইন্ডিয়ান গাড়ল এবং ১২০টি রাজস্থানী, বিটল, যমুনাবারী ও তোতাপুরী প্রজাতির ছাগল রয়েছে। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাড়লের বাজার মূল্য ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। খামারে সব থেকে বেশি দামি ছাগল হচ্ছে বিটল প্রজাতির। যার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা। মাংস সুস্বাদু হওয়াই এবং চাহিদা বেশি থাকায় খামার থেকেই বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি মাংসের দাম ১ হাজার টাকা। গাড়লের খামারটি দেখতে প্রতিদিন আসেন অনেকেই। এখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক পরিবার।  

খামারে কাজ করা কয়েকজন জানান, করোনার কারণে দেশে প্রায় সব কিছু বন্ধ। অনেকেই বেকার হয়েও পরেছে। উত্তর অঞ্চলে তেমন কোন কলকারখানা নেই। এলাকাতে গাড়লের খামারে কাজ করে অনেকেই। খামারে কাজ করে যে বেতন পায় তারা সে দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলছে।

খামার মালিক শাহিনুর রহমান সবুজ জানান, প্রথমে তিনি ১০টি গাড়ল ১৫টি ছাগল নিয়ে খামার শুরু করেন। এখন তার খামারে ২০০টির বেশি গাড়ল ও ছাগল রয়েছে। বছরের এখান থেকে প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা আয় করে থাকেন। এর পাশাপাশি তার গরুরও খামার রয়েছে। গাড়লের মাংসের চাহিদা অনেক। ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে গাড়লের মাংস। অল্প বিনিয়গে বেশ লাভ হওয়াই এলাকায় সারা ফেলেছে এই গাড়লের। সরকারী সহযোগীতা ও সহজ সর্তে ঋন পেলে নিজ উদ্দ্যেগে গড়ে উঠবে আরো অনেক খামার এবং মাংসের চাহিদা মিটাবে পাশাপাশি অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখবে বলেও মনে করেন তিনি।

নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, আমরা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে নিয়মিত টিকাসহ সব ধরনের সেবা দেওয়া দিচ্ছি। এই উপজেলাতে প্রায় কয়েখটি ছোট বড় গাড়লের খামার রয়েছে। সবুজের খামারটি বড়। গাড়ল পালনে তেমন কোন খরচ হয়না। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ার কারণে অনেকেই এই গাড়ল পালন করছে।

মুনিয়া

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন গাড়ল | পালনে | ভাগ্য | বদলেছে | সবুজের