হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি বিশেষ লাউঞ্জ উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আমাদের অভিবাসী শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছিল।
সোমবার (১১ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা এ লাউঞ্জের উদ্বোধন করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা প্রবাসীদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ। আমরা বিশ্বাস করি এই লাউঞ্জ তাদের ভ্রমণকে সহজ করবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রবাসীদের কষ্টের টাকা একজন বিদেশে পাচার করেছেনG এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য। সেখান থেকে আমাদের ফিরে আসতে হবে, দেশের টাকা যেন দেশের কাজে লাগে
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আপনাদের দিয়েই তো দেশ চলে। আপনাদের মাথায় করে রাখা উচিত। অপরাধী করে রাখবে কেন? এমন রকম ভাবখানা যে, তোমরা টাকা রোজগার করতেছো— আমাদের কি? তোমাদের ব্যাপার, আমাদের কী? প্রবাসীদের টাকা যেটা রোজগার করছে, সেটা তো বাংলাদেশের জন্য করছে। আপনারা কষ্ট করে টাকাটাও রোজগার করে আনেন, দুর্ভাগ্য হলো দেশের এই টাকা একজন পাচার করেছে। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য। সেখান থেকে তো আমাদের ফিরে আসতে হবে, আমাদের দেশের টাকা যেন দেশের কাজে লাগে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের যে প্রাপ্য, যে সম্মান, সেই সম্মান যেন জাতি দিতে পারে। সেই সম্মান দেওয়ার জন্য আজকের প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে এটা। আমি আশা করি, আরও বহু রকমের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যাতে করে আপনারা এখানে এসে মনে করেন যে, শান্তিতে আছেন, বাড়িতেই আছেন। সবাই আপনাদের দেখভাল করছে, সবাই আপনাদের সেবা শুশ্রূষা করছে। অর্থাৎ আপনি এখানে মেহমানের মতো থাকবেন, সম্মান নিয়ে থাকবেন। আপনার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এই প্রচেষ্টা। আজকে যেটা শুরু করলাম এটা নিয়ে বহুভাবে কাজ করা যাবে।
পাসপোর্ট ছাপানো কথা বলছেন, পাসপোর্ট ছাপাতে হবে কেন? এখন ই-পাসপোর্ট হবে। ছাপার দরকার নেই। পাসপোর্ট আপনার টেলিফোনে চলে আসবে। অফিসে যেতে হবে না। আমার এখনো সরকারি অফিসে যেতে চাই না। আমাদের বাড়িতে এসে দিয়ে যাবে। সরকারি অফিস মানে হলো যন্ত্রণা। এই যন্ত্রণার মধ্যে আমি কেন যাবো।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই ধরনের প্রবাসী লাউঞ্জ এবারই প্রথম। এ লাউঞ্জে অভিবাসী কর্মীরা বিশ্রাম নিতে পারবে এবং ভর্তুকিযুক্ত খাবার খেতে পারবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে আইওএম মিশনের ডেপুটি চিফ ফাতিমা নুসরাথ গাজ্জালি বলেন, জাতিসংঘের সংস্থা বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকদের সহায়তা করার জন্য লাউঞ্জটিকে স্পনসর করেছে। এটি প্রধান উপদেষ্টার একটি উদ্যোগ। আমরা এই উদ্যোগকে সমর্থন করতে পেরে আনন্দিত। এছাড়া, বিমানবন্দরে অভিবাসীদের সাহায্য করার জন্য আইওএম প্রায় ১০০ স্বেচ্ছাসেবককে স্পনসর করছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ।
এসি//