আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের অধীনে থাকবে না গণতান্ত্রিক সরকার। দেশ পরিচালনায় গঠন করা হতে পারে রুলিং কাউন্সিল। বুধবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন তালেবানের উর্ধ্বতন কমান্ডার ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমি।
রয়টার্সকে সশস্ত্র সংগঠনটির ঊর্ধ্বতন সদস্য ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমি বলেন, কোনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকবে না। কারণ আমাদের দেশে এর কোনো ভিত্তি নেই। কোন ধরনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা আমরা প্রয়োগ করব তা নিয়ে আলোচনা করব না। কারণ এটি স্পষ্ট। আফগানিস্তান চলবে শরিয়া আইনে। এটাই শেষ কথা।
তালেবানের উর্ধ্বতন কমান্ডার বলেন, চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে তালেবান নেতৃত্বের সঙ্গে একটি বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। এতে দেশ পরিচালনা নিয়ে আলোচনা হবে। তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবুতুল্লাহ আখুন্দজাদা আফগানিস্তানের সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন বলে মনে করছেন হাশিমি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন সর্বোচ্চ নেতার কোন একজন ডেপুটি।
বর্তমানে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতার তিন জন ডেপুটি আছেন। তারা হলো, মোল্লা ওমরের ছেলে মৌলবি ইয়াকুব, শক্তিশালী হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি এবং দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান আবদুল ঘানি বারাদর, তিনি তালেবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
এছাড়া ক্ষমতাচ্যুত আফগান সরকারের পক্ষে যুদ্ধ করা সেনা ও পাইলটদের নিয়োগের প্রসঙ্গে হাশিমি বলেন, একটি নতুন জাতীয় বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা করেছে তালেবান। ওই বাহিনীতে তালেবানের নিজস্ব সদস্যসহ যোগ দিতে ইচ্ছুক সাবেক সরকারি সেনারাও থাকবে। তালেবানের পক্ষ থেকে সাবেক পাইলট ও সেনাদের বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হবে। তাদের বেশিরভাগ তুরস্ক, জার্মানি ও ইংল্যান্ডে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তাই, তাদের আমাদের দরকার। তাদের সঙ্গে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে আসতে কথা বলব আমরা। আমরা অবশ্যই কিছু পরিবর্তন আনব, সংস্কার হবে সেনাবাহিনীতে। এরপরও তাদের প্রয়োজন আছে এবং আমরা তাদের যোগ দিতে আহ্বান জানাব।
এ সময় হাশিমি বলেন, তালেবান আশা করে প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের ভূখণ্ডে অবতরণ করা উড়োজাহাজগুলো ফিরিয়ে দেবে। এসব উড়োজাহাজের মধ্যে ২২টি সামরিক বিমান এবং ২৪টি হেলিকপ্টার রয়েছে। গেল কয়েক দিনে উজবেকিস্তানে পালিয়ে গেছে শত শত আফগান সেনা।
তালেবানের শাসন ব্যবস্থার যে কাঠামো তুলে ধরেছেন, তার সঙ্গে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময় যেভাবে আফগানিস্তান চালিয়েছিল, সে ব্যবস্থার মিল থাকবে। তালেবানের আগেরবারের শাসনামলে সংগঠনের শীর্ষ নেতা মোল্লা ওমর প্রকাশ্যে থাকতেন না। ওই সময় একটি কাউন্সিলের অধীনে আফগানিস্তানের প্রতিদিনের কার্যক্রম পরিচালিত হতো।
এসএন