আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ঝালকাঠিতে আমড়ার বাম্পার ফলন, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যেও

ঝালকাঠিতে আমড়ার বাম্পার ফলন, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যেও

ঝালকাঠিসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলা গুলোতে চলতি বছরে আমরার বাম্পার ফলন হয়েছে। এখানে উৎপাদিত আমরার সরবরাহ হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে। রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। ধানের চেয়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় আমড়া চাষে ঝালকাঠির কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফল আমড়া। টক-মিষ্টি স্বাদের ফলটি কমবেশি সবারই প্রিয়। দেশীয় এ ফল নির্দিষ্ট মৌসুমে পাওয়া যায় প্রায় দেশজুড়েই। তবে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ঝালকাঠি তথা উপকূলীয় জেলাগুলোর হাজার হাজার আমড়ার চাষীরা আমড়ার ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। প্রতি বছরই তাদের উৎপাদিত ফসল নামমাত্র মূল্যে কিনে নিচ্ছেন পাইকার নামক মধ্যসত্ত্বভোগীরা, বিনা শ্রমে তারা অর্জন করছে বিপুল মুনাফা। চলতি মৌসুমে আমড়ার ফলন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে প্রতি মন আমড়া পাইকারি ৭০০থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর এক কুড়ি (২০টা) আমরা ৫০থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হয়। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছ থেকে গড়ে ৫মন আমড়া পাওয়া যায় যা দিয়ে একর প্রতি কমপক্ষে ৪-৫ লাখ টাকা আয় হয়। আমড়া চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও জলবায়ু বেশ উপযোগী। তাই আমড়ার ফলনও এ অঞ্চলে বেশি হয়ে থাকে। কৃষকরা আমড়া চাষ করে অতি সহজে হতে পারেন স্বাবলম্বী। এছাড়া মৌসুমি ফল আমড়া হতে পারে এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান আয়ের উৎস।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে মোট উৎপাদিত আমড়ার এক-তৃতীয়াংশের আবাদ হয় বরিশাল অঞ্চলে। আর এ অঞ্চলের উৎপাদিত সিংহভাগ আমড়ার আবাদ হয় বরিশাল বিভাগের বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনাসহ প্রতিটি জেলার আনাচে-কানাচে।

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্র জানিয়েছে, চলতি বছর জেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৮ থেকে ১০ টন আমড়া উৎপাদন হয়েছে।

ঝালকাঠির আমড়ার অন্যতম মোকাম ঝালকাঠির বাউকাঠি ও ভীমরুলির ভাসমান বাজার। এ ছাড়া পিরোজপুরের আটগড়, কুড়িয়ানা, বরিশালের বানরীপাড়াসহ ছোট-বড় প্রায় ২০টি বাজারে আমড়ার বেচাকেনা হয়। এসব বাজার থেকে নৌ-পথে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আমড়ার চালান করা হয়। এসব বাগানে প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকার আমড়ার উৎপাদিত হয়।এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষের জীবন-জীবিকা আমড়ার, পেয়ারা ও সবজি নির্ভর।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা গ্রামের বেশিরভাগ এলাকায় আমড়া কেনা-বেচার ব্যাপারী রয়েছেন। তারা আগাম টাকা দিয়ে বাগান কিনে নিয়েছেন।

উপজেলার আমড়া ব্যবসায়ীরা জানান, এ মোকাম থেকে বছরের চার মাস অর্থাৎ আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক কোটি টাকার আমড়া চালান দেয়া হয়। ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, সিলেট, চট্টগ্রাম, রংপুর, নোয়াখালী ছাড়াও এখন দেশের বাইরে ভারত, দুবাই, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ডসহ রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।

পুরোপুরি নিজস্ব মেধা আর পরিশ্রম দিয়ে এ এলাকার কৃষকরা আমড়ার চাষ করে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। পাশাপাশি আমড়ার চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি করা গেলে এ অঞ্চলের কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পতিত জমিতে বেশি বেশি আমড়া গাছ লাগালে অরো বেশি পুষ্টি সহায়ক এবং গ্রমীন অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে বলে জনান কৃষিবিদরা।

মুনিয়া

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ঝালকাঠিতে | আমড়ার | বাম্পার | ফলন | দেশের | গণ্ডি | পেরিয়ে | যাচ্ছে | মধ্যপ্রাচ্যেও