আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

মাদারীপুরে প্রতিমা তৈরিতে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা বেড়েছে

মাদারীপুরে প্রতিমা তৈরিতে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা বেড়েছে

চলতি বছরে ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিন-ব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে যাচ্ছে। শারদীয় দুর্গা উৎসবকে সামনে রেখে মাদারীপুরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। এই সময়ে দম নেয়ার ফুসরত নেই কারিগরদের। তবে বছরের অন্য সময়ে অলস সময় পার করতে হয় এসব মৃৎশিল্লীদের। আর করোনাকালিন মানবেত জীবন-যাপন করতে হয়েছে, দাবি এসব মৃৎশিল্পীদের।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য মতে, এবছর পুরো জেলায় ৪৪৭টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে সবচে বেশি হবে রাজৈর উপজেলায় ২৫১টি। এরপরে সদর উপজেলায় ৭১টি, শিবচরে ৬৩টি, ডাসারে ৪০টি এবং কালকিনিতে ২২টি মন্ডপে পূজার আনুষ্ঠানিকতা হবে। এ সকল মন্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ-শিল্পীরা।
 
মৃৎশিল্পীরা জানান, করোনা ভাইরাসের দুশ্চিন্তা থাকলেও আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমার কারণে আনন্দ-উৎফুল্ল হয়ে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা প্রতিমা তৈরির কাজে নেমে পড়েছেন। সঠিক সময়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে হবে বলে পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বাড়তি চার-পাঁচ জন প্রমিক নিয়ে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। দূর্গা উৎসব আসলে মৃৎশিল্পীদের কদর বাড়ে। অন্য সময় তারা কৃষি কাজসহ বিভিন্ন পেশায় কাজকর্ম করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

মাদারীপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রান্তষ মন্ডল বলেন, জেলায় ৪৪৭টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা পাঁচ দিন ব্যাপী শারদীয় উৎসব পালন করবো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজার আনুষ্ঠানিকতা হবে। তবে করোনার আগে যেমন বাড়তি জাকজমকপূর্ণ হতো, সেটা এবার হবে না। তবে গত বছরের চেয়ে একটু বেশি আনন্দ-উৎল্লাস থাকবে।

কালকিনি পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নির্মল কান্তি বৈদ্য জানান, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ার কারণে আমরা বড় দুচিন্তায় ছিলাম। ঈশ্বরের কৃপায় করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু কমায় পূজার আয়োজন ও প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে।

তিনি আরও জানান, শারদীয় দূর্গা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য মাদারীপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কালকিনি উপজেলা প্রশাসন ও কালকিনি থানা অফিসার ইনচার্জসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি। আশা রাখি তাদের সকলের সহযোগিতায় আমরা পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবো।’
 
মৃৎশিল্লী পরিমল মন্ড বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে আমাদের কাজের গতি বাড়তে থাকে। এই পুরো মাস দম ফেরাতে পারবো না। তবে বছরের অন্য সময় মাটির কাজ থাকে না। এই এক দেড় মাসের কামাই দিয়ে পুরো বছরের সংসার চলে। আমাদের মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা আগের মতো নাই, যে কারণে আমাদের এ পেশায় থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে জেলা-উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে দূর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ করতে বিভিন্ন ধরনের দিক-নিদের্শমূলক আলোচনাসভা করা হবে। শারদীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন সবসময় মনিটরিং করবে। এছাড়া কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বাহিনীর টহল অব্যাহত থাকবে, যাকে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা না ঘটে।’

মুনিয়া

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মাদারীপুরে | প্রতিমা | তৈরিতে | মৃৎশিল্পীদের | ব্যস্ততা | বেড়েছে