দেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থপাচার হচ্ছে তা রোধ করা গেলে আইএমএফের ঋণের প্রয়োজন হতো না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের সীমাহীন দুর্নীতিই দেশের অর্থনৈতিক বৈকল্যের কারণ। আইএমএফ যে পরিমাণ ঋণ দিচ্ছে তা প্রবাসীদের পাঠানো দুই মাসের আয়ের সমান। প্রতি বছর দেশ থেকে যে পরিমাণ ডলার পাচার হচ্ছে তা রোধ করা গেলে এই ঋণ নেওয়ার কোনো দরকারই হতো না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইএমএফের শর্ত পূরণে জনগণকে যেন খেসারত দিতে না হয়। আইএমএফ প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো দেশের প্রয়োজনে অনেক আগেই নিজ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা উচিত ছিল। দেরিতে হলেও ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতসহ অন্যান্য সংস্কারগুলো আন্তরিকতার সঙ্গে অবিলম্বে সম্পাদন ও বাস্তবায়ন আবশ্যক। কিন্তু অর্থনীতির বর্তমান দুঃসময়ে আইএমএফের শর্তগুলো পূরণে যেন নিম্ন আয়ের মানুষদের কষ্ট না হয়।
তিনি বলেন, আইএমএফের শর্ত পূরণে সারের পর তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামও বাড়ানোর ফলে মানুষের ভোগান্তি কতটা বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য। লক্ষ্য রাখতে হবে আইএমএফের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে যেন মানুষের বঞ্চনা ও কষ্ট না বাড়ে। বিশেষ করে সার, খাদ্য ও জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিপরীতে ওভার নাইট ভর্তুকি কমিয়ে দিলে জনভোগান্তি বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, আজকের ডলার ও অর্থনৈতিক সংকট তৈরির প্রধান কারণ ঋণ করে কম প্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প গ্রহণ। যার কিস্তি শোধ করতে গিয়ে এখন রিজার্ভে টান পড়েছে। বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এ পর্যন্ত প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকার মত দুর্নীতি করে লুট করা হয়েছে। দেশের গ্যাস উত্তোলন না করে এলএনজি ও কয়লা বেশি দামে বিদেশ থেকে কেনা হচ্ছে। ঋণ খেলাপিদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে চার লক্ষাধিক কোটি টাকা থেকে রাষ্ট্র বঞ্চিত হচ্ছে। আইএমএফ যে পরিমাণ ঋণ দিচ্ছে তা প্রবাসীদের পাঠানো দুই মাসের আয়ের সমান। প্রতি বছর দেশ থেকে যে পরিমাণ ডলার পাচার হচ্ছে তা রোধ করা গেলে এই ঋণ নেওয়ার কোনো দরকারই হতো না।