গ্রিসে একটি যাত্রীবাহী ও একটি কার্গো ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৭ জন হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬৬ জন।
গেলো মঙ্গলবার রাতে (২৮ ফেব্রুয়ারি) এথেন্স থেকে উত্তরাঞ্চলীয় শহর থেসালোনিকিগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে থেসালোনিকি থেকে লারিসাগামী একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
৩৫০ যাত্রী নিয়ে একটি ট্রেনের মঙ্গলবার মধ্যরাতের ঠিক আগে একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এখনো উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন কর্মীরা।
ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ ও তদন্তের দায়িত্বে থাকা ইলেনি জাগেলিদু বলেছেন, এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭। তাদের ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে, সরকারের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার একদিনের ধর্মঘট পালন করেছে রেল শ্রমিকরা। দুর্ঘটনার জেরে প্রতিবাদ জানিয়ে এথেন্স ও থেসালোনিকিতে দুই হাজারের বেশি মানুষ দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে।
এথেন্সের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, আমরা কোম্পানির প্রতি, সরকার এবং অতীতের সরকারগুলোর কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ। তারা গ্রিক রেলওয়ের অবস্থার উন্নতির জন্য কিছুই করেনি।
সরকারের একমন্ত্রী বলেছেন, ২০০০ সালের পর থেকে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে রেল ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগের অভাবে ভুগছিল।
হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে গ্রিসের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী জো রাপ্তি বলেন, ২০১০ সালের দিকে গ্রিসে ঋণ সংকটের কারণে রেল নেটওয়ার্কে বিনিয়োগ করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছিল। ঘটনার সঠিক তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
লারিসার একজন ৫৯ বছর বয়সী স্টেশন মাস্টারের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানান তার আইনজীবী। তবে তিনি একমাত্র দায়ী নন বলেও দাবি তার।
অন্যদিকে, ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন গ্রিসের অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস। বুধবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। তিনি এ সময় বলেন, মর্মান্তিক ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন কিছু না ঘটার ভান করে কাজ চালিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। আমি এই ব্যর্থতার দায় নিচ্ছি ও পদ ছেড়ে দিচ্ছি।
এ ঘটনায় দেশটিতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস এ দুর্ঘটনার জন্য মানুষের ত্রুটিকে দায়ী করেছেন।