মহামারী করোনার প্রকোপ কাটতে না কাটতেই এবার ভারতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ‘অ্যাডিনো ভাইরাস’। ভাইরাসটির আক্রমণে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বেশকিছু রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ এখনও মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১২০০ শিশু বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। গেলো মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অ্যাডিনো ভাইরাসের আক্রমণে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানায়, এবারের অ্যাডিনো ভাইরাসে শিশুদের উপরে ক্ষতিকর প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। অ্যাডিনো ভাইরাস অনেক শিশুর ক্ষেত্রেই নিউমোনিয়ার মতো হয়ে যাচ্ছে। অনেকের ভাইরাস থেকে মুক্তি পাবার পরেও দীর্ঘ দিন ধরে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা থাকছে যা চিকিৎসকদের উদ্বিগ্ন করছে।
শিশু বিশেজ্ঞরা জানান, অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুদের সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা লাগার মতোই হয়। তবে তার সঙ্গে যদি গলাব্যথা, পেটের গণ্ডগোলের মতো লক্ষণগুলো দেখা দেয় তাহলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসার প্রয়োজন। এই ভাইরাসের জন্য নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসাও নেই।
কলকাতায় ভাইরাস আতঙ্কে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যভবনের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ভাইরাস মোকাবিলায় বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। বড়দের পাশাপাশি ছোটদেরও একই অভ্যাস করাতে হবে। বাইরে থেকে এসে জামাকাপড় বদল করে সঙ্গে-সঙ্গে হাত ধুয়ে তবেই শিশুদের সংস্পর্শে আসতে হবে। ভিড় এড়িয়ে চলা ভাল। বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। কাশি-হাঁচির সময়ে রুমাল বা কনুই দিয়ে মুখ ঢাকতে হবে। কফ বা থুতু যেখানে সেখানে না ফেলার নির্দেশ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। যেসব শিশুদের কোনও গুরুতর জন্মগত অসুখ বা অপুষ্টির সমস্যা আছে, তাদের বিশেষ করে সাবধানে রাখুন।
শুধু সতর্কতাই নয়, অসুখ হলে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, তাও জারি করা হয়েছে এই নির্দেশিকায়। শিশু অসুস্থ হলে তাকে স্কুলে পাঠাতে নিষেধ করা হয়েছে। শিশু, গর্ভবতী মহিলা বা বৃদ্ধদের থেকে সংক্রমিত ব্যক্তিদের দূরে থাকা উচিত। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে গরম পানীয় বারবার দেয়া উচিত। বাসক পাতা, মধু, আদা, তুলসী, লবঙ্গ কাশি কমাতে সাহায্য করে।