সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্তের স্বার্থে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা হয়েছে সেই সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়েছে। সব বিবেচনায় নিয়েই ঘটনার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে অভিযুক্ত করেছে এবং তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
ঘটনার বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে ২৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এর একটি তদন্ত দল বিষয়টি তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে আসবেন । এবং তখনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৬ সেপ্টেম্বর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা হলে প্রবেশপথে অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেন।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস।
গতকাল রোববার সকালে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের বিসিক মোড় এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন ও কান্দাপাড়া এলাকায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বাইরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বিকেল ৪টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার ও তদন্ত কমিটির প্রধানসহ সহ ৩৩ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান ও রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল জানান, রেজিস্ট্রারসহ আমরা ৩৩ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা গতকাল বিকেল ৪টা থেকে একাডেমিক ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে ছিলাম। তবে রাত ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা আমাদের ছেড়ে দেয় ও বাসায় এসে পৌঁছে দিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে করা আন্দোলন থেকে এক শিক্ষার্থী বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে প্রকাশ্যে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। শামীম হাসান (২৪) নামে এক শিক্ষার্থীকে সংগে সংগেই শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
প্রসঙ্গক্রমে, ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে ২২ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে দ্বিতীয়বারের মত আন্দোলন ও আমরণ অনশনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শুক্রবার বিকেলেও অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় আবারও আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
মুক্তা মাহমুদ
