দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মধ্যে ঐতিহাসিক বৈঠকের ঠিক আগে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করে দেশটি।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নেতাদের যুগান্তকারী শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হওয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে উত্তর কোরিয়া আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) নিক্ষেপ করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা পিয়ংইয়ংয়ের দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিবিসি বলছে, উৎক্ষেপণের পর উত্তর কোরিয়ার এই আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১০০০ কিমি (৬২০ মাইল) উড়ে জাপানের পশ্চিমে পানিতে অবতরণ করে। গত সপ্তাহ থেকে এ নিয়ে পিয়ংইয়ং চতুর্থ দফায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করল। যদিও উৎক্ষেপিত অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্বল্প-পাল্লার ছিল।
কোরীয় উপদ্বীপের চারপাশে গেলো কয়েক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া চলার মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের এ ঘটনা ঘটল। উত্তর কোরিয়া বারবার বলেছে, তারা এ ধরনের সামরিক মহড়াকে উস্কানি হিসেবে দেখছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলে পিয়ংইয়ং থেকে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে এ ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়।
অন্যদিকে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সকালে উৎক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) হিসাবে নিশ্চিত করেছে। দেশটি বলেছে, উত্তর কোরিয়ার এ ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ৭০ মিনিট ধরে ৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি আকাশে উড্ডয়ন করেছে।
অবশ্য বৃহস্পতিবারের এ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পরও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল তার দেশের সেনাবাহিনীকে পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার এ ‘বেপরোয়া উস্কানির’ জন্য পিয়ংইয়ংকে মূল্য চোকাতে হবে।
বিবিসি বলছে, উত্তর কোরিয়া সর্বশেষ এক মাসেরও কম সময় আগে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) নিক্ষেপ করেছিল। উত্তর কোরিয়ার সেই পদক্ষেপের জেরে জাতিসংঘে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া জি-৭ দেশগুলো পিয়ংইয়ংয়ের নিন্দা জানিয়েছিল।
আইসিবিএম উৎক্ষেপণ বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। কারণ এ ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসর অনেক দীর্ঘ এবং সেগুলো এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডেও আঘাত হানতে সক্ষম।
উল্লেখ্য, আইসিবিএম বা ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে বেরিয়ে ছুটতে পারে, আবার পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারে। এ ক্ষেপণাস্ত্র অধিবৃত্তাকার গতিপথ ধরে নিশানার দিকে ছুটে চলে।