আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ঢাকায় পুলিশ খুন করে দুবাই গিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী কে এই আরাভ?

ঢাকায় পুলিশ খুন করে দুবাই গিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী কে এই আরাভ?
হত্যা মামলার পলাতক আসামির মালিকানাধীন একটি স্বর্ণের শো-রুম উদ্ধোধন করতে দুবাই গিয়েছিলেন বিশ্বসেরা ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে তিনি মঞ্চে উঠেননি। ১৫ মার্চ বুধবার দুবাইয়ে আরাভ জুয়েলার্স নামে ওই শো-রুম উদ্বোধনের আয়োজন করা হয়েছিলো। আরাভ জুয়েলার্সের লোগো বানানো হয়েছে একটি ঈগল পাখির আকৃতি দিয়ে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ৬০ কেজি স্বর্ণ। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ফেসবুকে একটি ভিডিওতে আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের শোবিজ জগতের বেশ কয়েকজন তারকাও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে ঘোষণা দেন। জুয়েলারি দোকানটির মালিক জুয়েলার্সের মালিক আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম। তিনি পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি। গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল গোয়েন্দা পুলিশ রবিউলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে খুন হন পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন। হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামী হওয়ার পর ভারতে পালিয়ে যান রবিউল। পরে ২০২০ সালে রবিউল ভারতের পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। ওই বছরের ২৮ জুলাই কলকাতা থেকে ইস্যু করা পাসপোর্টে রবিউলের নাম আরাভ খান হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তার বাবার নাম জাকির খান এবং মা রেহানা বিবি খান বলে উল্লেখ করা হয়। পাসপোর্টে তার স্ত্রীর নাম লেখা হয়েছে সাজিমা নাসরিন।পাসপোর্টের উল্লেখ করা হয়েছে আরাভের জন্ম ১৯৯৩ সালের ৩১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের নরেন্দ্রপুরে। আরাভ এখন দুবাইয়ে থাকেন। আরব আমিরাত সরকার ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর তাকে রেসিডেন্ট পারমিট দেয়। আগামী বছরের ৩০ অক্টোবর ওই পারমিটের মেয়াদ শেষ হবে। এদিকে হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে রবিউল অন্য একজনকে আত্মসমর্পণ করার জন্য ভাড়া করেছিলেন। রবিউলের পরিচয় ও ঠিকানা ব্যবহার করে মো. আবু ইউসুফ নামে এক ব্যাক্তি ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার একটি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। হত্যা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ইউসুফের পরিবারকে প্রতি মাসে টাকা দেওয়ার বিনিময়ে ইউসুফ এতে রাজি হয়ে আত্নসমর্পন করে নয় মাস কারাবন্দী থাকেন। একপর্যায়ে রবিউল ইউসুফের পরিবারকে টাকা দেয়া বন্ধ করে দেন। পরে আইনজীবীর মাধ্যমে ইউসুফ আদালতে আবেদন করেন যে তিনি আসলে আবু ইউসুফ। হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি রবিউল নন। এরপর আদালত ডিবিকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। তদন্তে ডিবি জানতে পারে, ইউসুফ চাঁদপুরের কচুয়া থানার আইনপুরের বাসিন্দা এবং তার বাবার নাম মো. নুরুজ্জামান ও মায়ের নাম হালিমা বেগম। সম্প্রতি দুবাইয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনের সংবাদ প্রচার হলে, এই পলাতক আসামির নাম প্রকাশ্যে আসে। এদিকে আরাভ তার ফেসবুক পেইজে ভিডিও বার্তায় শাকিব আল হাসনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন। এসব বিষয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হওয়ার পর রবিউলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো, এনসিবি কাজ শুরু করেছে। পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মনজুর রহমান এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। রবিউল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার আশুটিয়া গ্রামের মতিউর রহমান মোল্লার ছেলে। তাকে আপন, সোহাগ, হৃদয় নামেও অনেকে চেনে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ঢাকায় | পুলিশ | খুন | করে | দুবাই | গিয়ে | স্বর্ণ | ব্যবসায়ী | কে | আরাভ