সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে শ্রবণশক্তি নষ্ট করা এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলাম (১৯) উল্লাপাড়া আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
জাহিদুল উল্লাপাড়া মার্চেন্ট সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও উপজেলার কানসোনা গ্রামের বাসিন্দা। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বালশাবাড়ি গ্রামের মো. রুবেল নামে এক যুবককে। অন্য তিন আসামি হলেন—উল্লাপাড়া মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল হালিম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মেজবাহ এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুস সাত্তার।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজুরুল ইসলাম জানান, আদালতের বিচারক ইখলাস উদ্দীন অভিযোগটি গ্রহণ করে সিরাজগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জাহিদুলের সঙ্গে প্রধান আসামি রুবেলের ফেসবুকে পরিচয় ছিল এবং তাদের মধ্যে প্রায়ই ফোনে কথা হতো। ৯ আগস্ট রাতে রুবেল ফোন করে কৃষকগঞ্জ বাজারে দেখা করতে বলেন, তবে জাহিদুল যেতে না পারায় রুবেল গ্রামে এসে মসজিদের কাছে দেখা করেন। সেদিন রুবেল মোটরসাইকেল চুরির প্রসঙ্গ তোলেন।
পরদিন ১০ আগস্ট রাত ১টা ২৮ মিনিটে রুবেল আবার ফোন করে জাহিদুলকে বাড়ির পাশে ডাকেন। সেখানে গিয়ে জাহিদুল দেখেন, রুবেলের সঙ্গে আরও তিন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তারা মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে তাকে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করেন এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এসআই হালিম তার ডান কানে জোরে থাপ্পড় মারেন। এতে কানের পর্দা ফেটে রক্তক্ষরণ হয় এবং শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ সময় অন্য আসামিরা গলা চেপে ধরা, লাথি ও ঘুষি মেরে তার কোমর, পিঠ ও হাতে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, ঘটনার দুই দিন পর এএসআই আব্দুস সাত্তার জাহিদুলের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন এবং এক সাক্ষীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করেন। বাকি টাকা না দিলে চাকরি ও জীবন নষ্ট করার হুমকিও দেন তারা।
এ বিষয়ে উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল হালিম বলেন, “আপনারা যেন সত্য খবর প্রকাশ করেন। আমি বর্তমানে একটি মামলার তদন্তে ব্যস্ত, পরে কথা হবে।”
উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসি রাকিবুল হাসান জানান, “ঘটনাটি সত্য নয়। তারা একটি অভিযোগ তদন্তে দিয়েছিল, এইজন্য সে মামলাটি করেছে। এটুকুই আমরা জানি। তদন্ত হলে ঘটনার সত্যতা উদঘাটন হবে।”
আই/এ