১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে বিষয়টি সহজ নয়, কারণ অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র ওই সময়ে পাকিস্তানকে সহায়তা দিয়েছিল। বাংলাদেশ এ বিষয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বললেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
শনিবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এতো সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে এতো বেশি সংখ্যক লোককে হত্যা করার নজির নেই। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী জেনোসাইডের সেই নৃশংসতার নজির সৃষ্টি করেছে। হত্যা, ধর্ষণ, লুঠতরাজ, উৎখাত, উৎপীড়নসহ একটি জাতিকে বিপন্ন করার সকল চেষ্টাই তারা করেছে। স্বাধীনতার পর ৫২ বছর অতিক্রাান্ত হলেও এই নৃশংসতার ঘটনাকে জেনোসাইড হিসেবে জাতিসংঘ আজও স্বীকৃতি দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, জাতীয়ভাবে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি না পেলেও আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীর শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহারিয়ার আলম বলেন, পাকিস্তানের পক্ষে অনেক রাষ্ট্র সমর্থন দিয়েছিল। আর এখন সেই রাষ্ট্রগুলো পৃথিবীব্যাপী গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জোরালোভাবে চেষ্টা করে। সেই রাষ্ট্রগুলো বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ চাইলেও বা না চাইলেও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলে। বিশ্বে বিবদমান একাধিক রাষ্ট্র সে সময় গণহত্যার পক্ষে ছিল। আজ আমরা তাকিয়ে থাকব গণহত্যা দিবসে তারা কী বলছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা এশিয়ান জাস্টিস অ্যান্ড রাইটস-এর প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিক বারজার্স বলেন, এই গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা এর পেছনে দায়ী তাদের সাজা দিতে হবে। আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সত্য উন্মোচন করে তুলে ধরতে হবে। অনেকেই এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে ফেলেছে। এতে গণহত্যা হওয়ার যে বিষয়গুলো থাকে তা পূরণ করা যায়নি। তাই স্বীকৃতি লাভে এত সময় পার হয়ে যাচ্ছে।