আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

কবি বেগম সুফিয়া কামালের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কবি বেগম সুফিয়া কামালের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জননী সাহসিকা হিসেবে খ্যাত কবি বেগম সুফিয়া কামালের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার (২০ নভেম্বর)।

১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির সমস্ত প্রগতিশীল আন্দেলনে ভূমিকা পালনকারী সুফিয়া কামাল। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার ইচ্ছানুযায়ী তাকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

কবি বেগম সুফিয়া কামালের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা  আলাদা বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, কবি সুফিয়া কামাল জীবনাদর্শ ও সাহিত্যকর্ম বৈষম্যহীন-অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করবে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত কবি সুফিয়া কামাল। সুফিয়া কামাল ছিলেন নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ এবং সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে এক অকুতোভয় যোদ্ধা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কবি বেগম সুফিয়া কামাল যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। তিনি ছিলেন, একদিকে আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি, মমতাময়ী মা, অন্যদিকে বাংলার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছিল তাঁর আপসহীন এবং দৃপ্ত পদচারণা। বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামসহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার প্রত্যক্ষ উপস্থিতি তাকে জনগণের ‘জননী সাহসিকা’উপাধিতে অভিষিক্ত করেছে।

সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বেলা ৩টায় বরিশালের শায়েস্তাবাদস্থ রাহাত মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর সুফিয়া কামাল পরিবারসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এই আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন।

পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন এবং তিনি ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন।

১৯৭০ সালে তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ কার্ফু উপেক্ষা করে নীরব শোভাযাত্রা বের করেন।

সাঁঝের মায়া, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনা, উদাত্ত পৃথিবী ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এ ছাড়া সোভিয়েতের দিনগুলি এবং একাত্তরের ডায়েরী তার অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ।

সুফিয়া কামাল দেশ-বিদেশের ৫০টিরও বেশী পুরস্কার লাভ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলা একাডেমী পুরস্কার, সোভিয়েত লেনিন পদক, একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পদক।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কবি | বেগম | সুফিয়া | কামালের | ২২তম | মৃত্যুবার্ষিকী | আজ