সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) সদস্যদের মধ্যে বিগত ১৫ এপ্রিল থেকে সংঘর্ষ চলমান। দুই সপ্তাহে এ সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সংঘর্ষে এ পর্যন্ত প্রায় ৪’শর অধিক মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে বেসামরিক লোকজন ছাড়াও জাতিসংঘ কর্মী, মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছেন।
এদিকে সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। দেশটিতে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। খবর রয়টার্সের।
আটকে পড়া বাংলাদেশিদেরকে প্রথমে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান এবং পোর্ট সুদান থেকে পোর্ট জেদ্দায় ফিরিয়ে আনা হবে। জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের কয়েকটি ফ্লাইটে এ বাংলাদেশিদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সুদানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যেই খার্তুম এবং এর আশপাশের শহর থেকে বাংলাদেশিদেরকে ৮৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পোর্ট সুদানে গমনের জন্য নয়টি বাসের ব্যবস্থা করেছেন। বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল, জেদ্দা থেকে একটি টিম দূতাবাসকে সহায়তার জন্য আগামীকাল সুদান পৌঁছাবে।
বাংলাদেশিদেরকে পোর্ট সুদান থেকে পোর্ট জেদ্দায় পরিবহনের জন্য রাজকীয় সৌদি সরকার বিনামূল্যে সৌদি নৌবাহিনীর জাহাজ দেয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ২ মে’র মধ্যে সকল বাংলাদেশিকে পোর্ট সুদানে নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত বিষয়টি সুসম্পন্ন করার লক্ষ্যে আলাপ আলোচনার জন্য বর্তমানে পোর্ট সুদানে অবস্থান করছেন। ৩ মে বা ৪ মে তারিখের মধ্যে বাংলাদেশিরা জেদ্দা পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। জেদ্দার দুইটি বাংলাদেশ স্কুলে সুদান প্রবাসীদের জন্য খাদ্য, পানীয়, ঔষধ ও সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে প্রায় ১২ ঘণ্টার ভ্রমণ শেষে প্রবাসীদের যেন শারীরিক কোনো সমস্যা না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রেখে পোর্ট সুদানে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির পক্ষ থেকে প্রবাসীদের জন্য খাদ্য, পানীয়, ঔষধ এবং সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সুদান প্রবাসীরা যেদিন জেদ্দা পৌঁছাবেন সেদিন থেকেই বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে তাদের ঢাকায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরের প্রাক্কালে বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছেন।
বর্তমানে সুদানের দুই বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে, কিন্তু যুদ্ধবিরতির মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সুদানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের অফিস এবং বাসভবন আক্রান্ত হলেও তিনি অন্যত্র অবস্থান করে অফিস পরিচালনা করছেন বলে জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের নির্দেশনায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল জেদ্দার কনসাল জেনারেল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ এ বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন এবং সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসন সফলভাবে সম্পন্ন হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুদান প্রবাসীদেরকে নিরাপদে এবং সর্বোচ্চ কম সময়ের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বদ্ধ পরিকর।