আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

রামপুরায় বাসচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ৮ বাসে আগুন, বাসচালক আটক

রামপুরায় বাসচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ৮ বাসে আগুন, বাসচালক আটক

রাজধানীর রামপুরায় বাসচাপায় এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা আটটি বাসে আগুন দিয়েছে। শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ওই বাসের চালককে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে চালকের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ওই বাসটি জব্দ করা হয়েছে।

নিহতের নাম মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয় (১৬)। তিনি পূর্ব রামপুরার বাসিন্দা। তিনি রামপুরা একরামুন্নেসা বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। রামপুরার তিতাস রোডে ভাড়া বাসায় থেকে চায়ের দোকান চালান মাঈনুদ্দিনের বাবা।

সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাত ১১টার পর এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে বাসে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। 

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাত ১১টার পর রামপুরা বাজারের কাছে বাসচাপায় একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা সড়ক অবরোধ করে বাসে আগুন দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুমের অপারেটর জিয়াউর রহমান বলেন, বাসচাপায় ছাত্র নিহতের এ ঘটনায় অন্তত সাত থেকে আটটি বাসে আগুন দেয়া হয়। এ ঘটনায় ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। 

ঘটনার পর পর নিহত শিক্ষার্থীর পরিচয় নিশ্চিত করেছে রামপুরা থানা পুলিশ।

এদিকে এ ঘটনায় ৯টি বাসে যারা আগুন দিয়েছে তাদের খুঁজছে পুলিশ। ঘটনাকে উপলক্ষ্য করে কোনো সুযোগসন্ধানী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব বাসে আগুন লাগানোসহ ভাঙচুর করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখবেন তারা।

সোমবার রাতে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আ. আহাদ।

তিনি বলেন, ঘটনার পর চালক পালিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করে। তিনি বর্তমানে থানায় আছেন। তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাসটিও জব্দ করা হয়েছে। যতদূর জানি উত্তেজিত জনতা এসব আগুন ধরিয়েছে। আমরা নিহতের ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন তারা ভাঙচুর করেননি বা আগুন দেননি। অন্য কেউ এসে এসব করেছে। সুযোগসন্ধানী কেউ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাসে আগুন দিয়েছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হবে। এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। 

সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ ও আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর সড়কটি খুলে দেয়া হবে বলে জানান ডিসি মো. আ. আহাদ।  

স্থানীয়দের দাবি, রাতে ফাঁকা রাস্তা পেয়ে দুই বাসের প্রতিযোগিতায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

আবার কেউ কেউ বলছেন, বাস ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের পর বাসের হেলপার ওই শিক্ষার্থীকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেয় অন্য একটি বাস। পেছন থেকে আসা অনাবিলের বাসটির নিচে পিষ্ট হন তিনি।

তবে এই দুই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। 

রাকিব নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গিয়ে বলেন, রাইদা পরিবহণের একটি বাস রামপুরা থেকে মালিবাগের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে মাঈনুদ্দিন রাইদা বাসে উঠতে চেষ্টা করে। বাসে ওঠার পর কোনো কারণে সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে দেয়া হয়।

বাঁ পাশ দিয়েই বেপরোয়া গতিতে অনাবিল পরিবহনের একটি বাস আসছিল। বাসটি তাকে চাপা দেয়। এরপর তারা ২০-২২ জন মিলে বাসটিকে রামপুরা থেকে মালিবাগের দিকে ধাওয়া আটক করেন।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন রামপুরায় | বাসচাপায় | শিক্ষার্থীর | মৃত্যু | ৮ | বাসে | আগুন | বাসচালক | আটক