নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে প্রায় ১০ লাখ ৮৫ হাজার সুউচ্চ ভবনের সম্মিলিত ওজনের কারণে ধীরে ধীরে দেবে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর।
গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটির ৫টি অঞ্চলে ভবন রয়েছে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৪টি। এগুলোর আনুমানিক ওজন ধারণা করা হচ্ছে ৭৬২ বিলিয়ন কিলোগ্রাম। যা যাত্রী ও মালামালভর্তি প্রায় ১০ লাখ ৯০ হাজার বোয়িং-৭৪৭-৪০০এস উড়োজাহাজের ওজনের সমান।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ কেন্দ্রের প্রধান গবেষক ভূপদার্থবিদ টম পারসনস বলেন, স্যাটেলাইটের তথ্য পর্যালোচনার পর ধারণা করা হচ্ছে বছরে কমপক্ষে ১- ২ মিলিমিটার দেবে যাচ্ছে নিউইউর্ক। কোথাও এটি ৪ মিলিমিটারের কিছু বেশি।
উপকূলবর্তী শহরগুলোর ওপর করা আরেক গবেষণায় বলা হয়েছে এমন ৪৮টি জনবহুল শহরের মধ্যে ৪৪টি ধীরে ধীরে দেবে যাচ্ছে। এই দেবে যাওয়ার মাত্রা সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির চেয়ে বেশি পরিমাণে হচ্ছে।
নতুন এই গবেষণায় দেখানো হয়েছে ভবনের ওজন কীভাবে এর নিচের ভূমির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
তবে ভূপদার্থবিদ টম পারসনস বলেন, ‘এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে এটি চলমান প্রক্রিয়া, যা বন্যায় জলমগ্ন হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ায়।’
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে থাকায় পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে উপকূলবর্তী এই শহর।
১৯৫০ সাল থেকে নিউইয়র্ক সিটির আশপাশে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৯ ইঞ্চি বা ২২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকায় এখনকার চেয়ে এই শতাব্দীর শেষ দিকে বড় ধরনের বন্যার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে।
আর্থ ফিউচার জার্নাল–এ প্রকাশিত নিবন্ধে গবেষকেরা বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক সিটির জলমগ্নতার কারণে শহরটিতে ব্যাপকভাবে কেন্দ্রীভূত ৮৪ লাখ মানুষ বিভিন্ন মাত্রার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।’
গবেষণায় বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক সিটি যে ঝুঁকি মোকাবিলা করছে, জলবায়ু পরিবর্তন তীব্র হওয়ায় বিশ্বের আরও অনেক উপকূলীয় শহর একই ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, ভূ-গঠনগত ও মনুষ্যসৃষ্ট উভয় কারণে ভূ-স্তর দেবে যাওয়া, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা উপকূলীয় ও নদীতীরবর্তী অঞ্চলের সমস্যা ত্বরান্বিত করার আভাসই দিচ্ছে।
সূত্র: সিএনএন