আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

‘মুজিব বর্ষ’ বানান ভুল নিয়ে আয়োজক কমিটির ব্যাখ্যা

‘মুজিব বর্ষ’ বানান ভুল নিয়ে আয়োজক কমিটির ব্যাখ্যা

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশব্যাপী একযোগে যে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সেখানকার মূল পোডিয়ামে বানান ভুল হওয়া অপ্রত্যাশিত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক বলে জানিয়েছেন শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

চলমান সব অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেই এর কারণ আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বানানো মঞ্চে উঠে শপথ পাঠ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভার্চুয়ালি সারা দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলার নির্ধারিত ভেন্যু থেকে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যে কারণে বাংলাদেশে ও দেশের বাইরের কোটি মানুষের চোখ ছিল টেলিভিশনের পর্দায় এবং ফেসবুক লাইভে।

সেখানে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী যে পোডিয়াম বা ডায়াসের সামনে শপথ পাঠ করেছেন সেখানে মুজিববর্ষ বানানটি লেখা হয়েছে 'মুজিবর্ষ'। অর্থাৎ মুজিববর্ষের মাঝখানের একটি 'ব' সেখানে নেই। যদিও শপথ পত্রে বানানটি লেখা হয়েছে 'মুজিববর্ষ'।

এরপরেই সমালোচনার ঝড় ওঠে যে, যে দিবসকে ঘিরে এত আয়োজন সেই মুজিববর্ষের গুরুত্বপূর্ণ লোগোর মূল বানানটাই ভুল করেছে আয়োজক কমিটি।

এরপর আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেয়া হয় যে, ডিভাইস ট্রান্সফারের একপর্যায়ে 'মুজিব বর্ষের' একটি 'ব' অক্ষর বাদ পড়ে গিয়েছে। কারিগরি জটিলতার কারণে এই ভুল হওয়ায় এজন্য কাউকেই এককভাবে দায়ী করার কোন অবকাশ নেই বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন নাসের চৌধুরী।

তবে তিনি জানান, এই ভুলটি চোখে পড়ার পরই সেটি সংশোধনের পাশাপাশি ইভেন্ট আয়োজকদের কাছে এর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

নাসের চৌধুরী বলেন, ইভেন্ট আয়োজকরা জানায়, প্রধানমন্ত্রী যে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে শপথ পড়ছিলেন, সেখানে মুজিববর্ষের মনোগ্রামটি লেখা ছিল মূলত একটি গোলাকার এলইডি স্ক্রিনে।

তারা ব্যাখ্যা দেয় যে সেই মনোগ্রামে একটি বিশেষ লিপি বা ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। ল্যাপটপে মনোগ্রামের লেখা ঠিকভাবে এলেও সেটা এলইডি মনিটরে ট্রান্সফার করার পর সেটি ভেঙে মাঝের একটি 'ব' অক্ষর গায়েব হয়ে যায় বল তারা জানায়।

পোডিয়াম থেকে ওই মুহূর্তে বেশ দূরে অবস্থান করার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ত্রুটিটি চোখে পড়েনি বলে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে নাসের চৌধুরী বলেন, ল্যাপটপে ডিজাইন ঠিকই ছিল। সেটা যখন চিপের মাধ্যমে এলইডি স্ক্রিনে ফেলা হয়েছে তখন সেটার মেকআপ ভেঙে যায়। এলইডির ক্রপ স্ক্রিনে ওই ফন্টটি সাপোর্ট করেনি, এ কারণে 'ব' টা সরে গিয়েছে।

এই ভুলকে মার্জনার দৃষ্টিতে দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আবেগের প্রতি আরও সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আয়োজক কমিটির মিডিয়া কনসাল্টেন্ট আসিফ কবীর গণমাধ্যমে ঘটনাটিকে যান্ত্রিক ত্রুটি দাবি করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

তিনি বলছেন, ওই লেখাটি চিপ-এর মাধ্যমে পিসি থেকে ট্রান্সফার করা হয়। এই ডিভাইস ট্রান্সফারের এক পর্যায়ে একটি যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য 'ব' অক্ষরটি হারিয়ে যায়। পিসিতে লেখাটি নির্ভুল থাকলেও, ভুল এসেছে এলইডি স্ক্রিনে।

গণমাধ্যমকে দেয়া ব্যাখ্যায় এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এ্যাডভান্স টেকনোলজির বিষয়টি হয়তো স্যুট করেনি। তবে বানান ভুলের বিষয়টি আয়োজকদের দৃষ্টিতে আসার পরপরই অনুষ্ঠানের বিরতির সময় এই ত্রুটি দ্রুত দূর করা হয় বলে জানান নাসের চৌধুরী।

'মহাবিজয়ের মহানায়ক' প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের রাষ্ট্রপতিসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা। ছিলেন সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগ দেওয়া অগণিত মানুষ। 
সূত্র: বিবিসি বাংলা

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মুজিব | বর্ষ | বানান | ভুল | নিয়ে | আয়োজক | কমিটির | ব্যাখ্যা