আগামি ১২ জুন অনুষ্ঠেয় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
এদিকে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা রোববার (১১ জুন) মধ্যরাতে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হতে যাওয়ায় তারা ভোটারদের আকৃষ্ট করতে দ্বারে দ্বারে গিয়ে শেষ মুহূর্ত অতিক্রম করছেন।
কেসিসি নির্বাচন ২০২৩-এর রিটার্নিং অফিসার (আরও) মো. আলাউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নগর এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা ইসির কাছ থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পেয়েছি এবং ২৮৯টি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ইভিএম ব্যবহার কওে ভোট গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। মোট ২৮৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১ হাজার ৭৩২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৩ হাজার ৪৬৪ জন পোলিং অফিসার নির্বাচনী সামগ্রি ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ আগামীকাল ভোট কেন্দ্রে পৌঁছাবেন।
কেএমপির অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম জানান, শান্তিপূর্ণভাবে কেসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আগামীকাল থেকে পুলিশ, আনসার, এপিবিএন এবং র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করা হবে। মোট ৩১টি ভ্রাম্যমাণ টিম, পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স ও ৬ টি সংরক্ষিত স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ ১০টি স্ট্রাইকিং টিম এবং র্যাবের ১৬টি টিম ভোটের সময় সতর্ক থাকবে। প্রয়োজনে ১১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করার জন্য প্রস্তুত থাকবে বলেও জানান রিটার্নিং অফিসার।
এছাড়া সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সাদা পোশাকের নিরাপত্তাকর্মীরা দায়িত্ব পালন করবেন। ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৩১টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং ১০ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট রোববার থেকে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের বিচারের জন্য ১০টি সামারি কোর্টের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং তারা আগামী ১৩ জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
আগামী ১২ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের ১ হাজার ৭৩২টি বুথে ইভিএম ব্যবহার করে কেসিসির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
রিটার্নিং অফিসার আরও বলেন, কেসিসি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে ঢাকা ও খুলনা উভয় জায়গাতেই ইতিমধ্যে প্রায় ২ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচনে কোনো সমস্যা দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেয়র পদের জন্য ৫ জন, ২৯টি সাধারণ কাউন্সিলর পদের জন্য ১৩৪ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের জন্য ৩৯ জনসহ মোট ১৭৩ জন প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীরা আজ মধ্যরাত পর্যন্ত শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় বিরামহীনভাবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুইজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এবারের কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী পাঁচ প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগ সমর্থিত তালুকদার আবদুল খালেক (নৌকা), জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙল), বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা আবদুল আউয়াল (হাত পাখা), জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন (গোলাপ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান মুশফিক (টেবিল ঘড়ি)।
কেসিসি নির্বাচনে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৮ জন পুরুষ ও ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৮ জন নারীসহ মোট ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২২ জন ভোটার রয়েছেন।