আর্কাইভ থেকে ছাত্র-শিক্ষক

কুয়েট শিক্ষক মৃত্যু: ৪ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার

কুয়েট শিক্ষক মৃত্যু: ৪ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ চার শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। 

আজ বুধবার (৫ জানুয়ারি) ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির মুলতবী সভার পর কুয়েট সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া ৭ জনকে বিভিন্ন সাজা দেওয়া হয়েছে।

বহিষ্কৃত বাকী তিনজন হলেন: আবু হাসান আব্দুল কাইয়ূম, মো. কামরুজ্জামান রাজ্জাক ও রিয়াজ খান নিলয়।

কুয়েট অধ্যাপকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সেজানসহ ৪৪ শিক্ষার্থীর শোকজের জবাব এবং ৪৪ পৃষ্ঠার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সভায় প্রদান করা হয়। কমিটির সভাপতি ও কুয়েট উপাচার্য প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) প্রফেসার ড. মো. ইসমাইল সাইফুল্লাহ ও পাবলিক রিলেশন অফিসার মো. রবিউল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে করে জানান, সকাল ৯টায় পুনরায় সভা শুরু হয়। পরবর্তীতে বেলা ১১টায় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

গত বছরের ৩০ নভেম্বর বিকেলে কুয়েটের ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন মারা যান। তার মৃত্যুর পর সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে এই মৃত্যুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সেজানসহ তার অনুগত ছাত্ররা দায়ী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে ওই অধ্যাপককে চাপ দিয়ে আসছিলেন ফজলুল হক হলের শিক্ষার্থীরা ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেজানের নেতৃত্বাধীন কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিমকে জেরা শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন।

সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায়, তারা আধ ঘণ্টার মতো শিক্ষকের রুমে অবস্থান করেন। পরে কক্ষ থেকে বেরিয়ে ড. সেলিম দুপুরের খাবার খেতে নিজ বাসায় যান। দুপুর আড়াইটার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অভিযোগ ওঠে, দাপ্তরিক কক্ষে কুয়েট নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কতিপয় ছাত্রের জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে ড. সেলিমের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে দুই দফায় কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অপরদিকে ড. সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ২ ডিসেম্বর দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। 
প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ দায়ী ছাত্রদের শাস্তির দাবি জানান শিক্ষকরা।

তাসনিয়া রহমান

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কুয়েট | শিক্ষক | মৃত্যু | ৪ | শিক্ষার্থী | আজীবন | বহিষ্কার