নরসিংদীতে স্থায়ী ও অস্থায়ী ৭১টি পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় বাড়লেও পুরোদমে জমেনি পশু বেচাকেনা। হাটগুলোতে ছোট বড় সবধরনের পশুর আমদানি থাকলেও দাম বাড়তির কারণে পশুবেচাকেনা পুরোপুরি জমে উঠেনি বলে জানান বিক্রেতারা।
শনিবার সকাল থেকে জেলার অন্যতম বৃহৎ স্থায়ী পশুর হাট শিবপুরের পুটিয়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের গরু নিয়ে হাজির বিক্রেতারা। পাশাপাশি রয়েছে মহিষ, ভেড়া ও ছাগল। সকাল থেকে প্রচুর পশুর আমদানি ও ক্রেতা বিক্রেতায় এই হাট মুখর হয়ে উঠলেও বেচাকেনা হয় তুলনামূলক কম। বিকালে বাড়তে থাকে বেচাকেনা। অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রতি ছোট গরুতে ২০-৩০ হাজার ও বড় গরুতে ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে বলে জানান ক্রেতারা। এতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষকে বাজেট অনুযায়ী পশু কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় লালন পালন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পশুর দাম বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর বেশি চাহিদা বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছোট ও মাঝারি আকারের গরু কমবেশি বেচাকেনা হলেও বড় গরুর বেচাকেনা কিছুটা কম। বিক্রেতা ও পাইকাররা বলছেন তারা অল্প লাভেই পশু বিক্রি করছেন। ঈদ ঘনিয়ে আসায় শেষ মুহুর্তে বেচাকেনা আরও বাড়বে বলে আশাবাদী বিক্রেতারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গরু কিনতে আসা শেখ নান্নু মিয়া জানান, অন্যান্য বাজারের তুলনায় পুটিয়া বাজারটি অনেক বড়, পশুর দামও কিছুটা কম। কেনাবেচা খুব একটা খারাপ না, তবে গতবারের তুলনায় দাম একটু বেশি।
ক্রেতা কাউছার মিয়া বলেন, পশুর দাম অনুযায়ী বাজেট মিলছে না। সব পশুর দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে। বাজার ঘুরে কেনার চেষ্টা চলছে। এই বাজারে কিনতে না পারলে অন্য বাজারে যাব।
ক্রেতা নুরুদ্দিন মোল্লা বলেন, বাজার বেশি অস্থিতিশীল মনে হচ্ছে না, ভারসাম্যপূর্ণই মনে হচ্ছে। আজকে পুটিয়া গরুর হাটের ঈদের প্রথম বাজার হিসেবে কেনা-বেচাও খারাপ বলা যাবে না।
গরু বিক্রি করতে আসা হাসান আলী জানান, গরুর খাবারের দাম বাড়ছে সে অনুযায়ী যা দাম বলার কথা কাস্টমার তার চেয়ে কম বলেন। গরুর মাংসের দাম ৭৫০ টাকা কেজি, ক্রেতারা এসে দামাদামি করেন ৪০০ টাকা ৪৫০ টাকা ধরে।
মহিষ বিক্রি করতে আসা শ্রাবণ জানান, 'দুইটা মহিষ পালন করছিলাম কুরবানির হাটে বেচার জন্য। আজ বাজারে নিয়া আইসা দাম ভালো পেয়ে বিক্রি করেছি।
কুরবানির পশু বিক্রি করতে আসা তানভীর হোসেন বলেন, 'প্রায় সাড়ে পাঁচ মণ ওজনের একটি ষাড় বিক্রি করেছি ২ লাখ ১৬ হাজার টাকায়। দাম মোটামুটি ভালই পেয়েছি'।
নরসিংদীর শিবপুরের পুটিয়া পশুর হাটের ইজরাদার মারুফ ইব্রাহিম বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে বাজার জমে উঠেছে। আশা করছি বেচাকেনা ভাল হবে। বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার থাকার সুব্যবস্থাসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি পশু অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে নজরদারি করা হচ্ছে। আমরাও বড় গরু কিনলে ইজারার টাকায় ২০ ভাগ ছাড় দিচ্ছি।