আর্কাইভ থেকে ছাত্র-শিক্ষক

‘দাঁত ভাঙ্গা মাসুদ’ বলায় ইবিতে মারামারি

‘দাঁত ভাঙ্গা মাসুদ’ বলায় ইবিতে মারামারি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ‘দাঁত ভাঙ্গা মাসুদ’ বলার অভিযোগে মামামারির ঘটনা ঘটেছে। যারা ডেকেছিল তারাই লাত্থি দিয়ে মাসুদের দাত ভেঙেছিল বলে জানা গেছে। তারা সকলেই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এসব ঘটনায় দুইটি পৃথক লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা উভয়ের কাছে। যার ফলে সোমবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে সহকারী প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেনকে আহ্বায়ক এবং অন্য দুই সহকারী প্রক্টর শাহবুব আলম ও শরিফুল ইসলাম জুয়েলকে সদস্য করা হয়েছে। তাদের আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের শরীফুজ্জামান শোভন ও অলিউর রহমানের বিরোধ দীর্ঘদিনের। গত ২৫ মে বেলা ১২টার দিকে বিভাগের ভাইভা শেষে ছবি তোলার সময় শোভনকে দেখে কটুবাক্য করে অলি। এসময় উভয়ের মাঝে হাতাহাতি হয়। পরে অলির আরেক বন্ধু ইংরেজি বিভাগের মাসুদ সেখানে গেলে শোভন, সাকিব সহ তার বন্ধুরা মাসুদ ও অলিকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ তাদের। মারধরের এক পর্যায়ে মাসুদের দাত ভেঙ্গে যায় ও চোখের পাশের্^ কেটে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তার। এদিকে বিষয়টি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমাধান করে দিলেও ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর রবিবার ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের ডায়না চত্ত্বর সংলগ্ন আম বাগান এলাকায় আবারো মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মাসুদ বলেন, গ্রীষ্মকালীন ছুটির আগে হলের বন্ধু অলিকে শোভন, সাকিবসহ অন্যরা মারতেছিল। আমি সেখানে ম্যাচুয়াল করতে গেলে আমাকেও মারধর করে। একপর্যায়ে আমার দাত ভেঙ্গে যায় এবং চোখের পাশে কেটে যায়। এটা সমাধানও হয়ে গিয়েছিল। গতকালকে (রবিবার) আমবাগান দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন আমাকে দেখে দাত ভাঙ্গা মাসুদ বলে হাসাহাসি করছিল শোভন ও তার বন্ধুরা। পরে আমি সেখানে গেলে আমাকে শোভন প্রথমে ধাক্কা দেয়। তারপর হাতাহাতি হয়েছে। এদিকে মাসুদকে নিয়ে হাসাহাসির বিষয়টি অস্বীকার করেন শোভন। তাকে অতর্কিতভাবে মারধর করা হরেছে উল্লেখ করে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। অভিযোগে তিনি ইংরেজি বিভাগের মাসুদের নেতৃত্বে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সজিব, বাংলা বিভাগের তাওহীদ মারধর করেছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি অভিযোগে বলেন, অতর্কিতভাবে কিল, ঘুষি লাথিসহ রাস্তার উপর ফেলে মাথায় আঘাত করতে থাকে। এতে তার মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাত পেয়েছে। নাক-মুখ হাতের আঙ্গুল জখমসহ রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং তার হাতঘড়ি, চশমা, মানিব্যাগ তারা কেড়ে নিয়ে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন করে। শোভন বলেন, গ্রীষ্মকালীর ছুটির আগে আমাদের মারামারি হয়েছিল। মারামারির সময় কে কেমন আহত হয়েছে আমি জানি না। সেদিন আমরা ছবি তোলার সময় অলি আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করলে তার সাথে কথাকাটাকাটি হয়। পরে অলি মাসুদকে ডেকে নিয়ে গেলে আমাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছিল। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি আরাফাত ভাই উপস্থিত থেকে সেটা মীমাংসা করে দিয়েছিলেন। গতকাল (রবিবার) অতর্কিতভাবে তারা আমাকে মারধর করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আজ সোমবার আমরা বসেছিলাম। সব পক্ষের সাথে কথা বলা হয়েছে। অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন দাঁত | ভাঙ্গা | মাসুদ | বলায় | ইবিতে | মারামারি