ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সফর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে। বললেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) সম্মেলনকক্ষে ‘গন্তব্য: স্মার্ট বাংলাদেশ’ সংকলন গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিমইয়ের সময় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইইউ প্রতিনিধিদল এসেছে নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে। তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে এসেছে, তা নয়। তারা যে এসেছে, এটি আগামী নির্বাচনের জন্য সহায়ক। নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণেই তারা এসেছে, তারা পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তুতি হিসেবে এ সফরে এসেছেন। সুতরাং সেটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সহায়ক হবে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের নানাবিধ বহুমাত্রিক সহযোগিতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমাদের বাণিজ্য রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। রোহিঙ্গা সমস্যা, সেটি একটি মানবিক সমস্যা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি সেখানে গিয়েছেন। মূলত এসব বিষয়ের জন্যই তারা এসেছেন।
একদফা আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে নতুন কিছু কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা মাঝেমধ্যেই এমন কর্মসূচি দেন। গত বছর একবার একদফা ঘোষণা করে বলেছিল যে, খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে এসে সভায় যোগ দেবেন। তারেক জিয়া উড়ে এসে সভায় বক্তব্য রাখবেন। কীভাবে উড়ে আসবে, সেই ব্যাখ্যা দেননি। আমরা ধরে নিয়েছিলাম, সম্ভবত বোরাকে চড়ে আসবে বা অন্য কোনোভাবে আসবে। এসে তারপর যোগ দেবে। এরকম আরও অনেক কথা বলেছিল। কিন্তু সেই আন্দোলন গরুর হাটে মারা গেছে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে বেগম জিয়ার শাস্তি যাখন নিশ্চিত হয়, তখনো এক দফা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেটি হালে পানি পায়নি। আবার বেগম জিয়াকে মাঝেমধ্যে খুব অসুস্থ বানিয়ে, জীবন সংকটাপন্ন বলে মানুষের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেছে। সেগুলোও হালে পানি পায়নি। গতকাল তারা পুরোনো কথাই নতুন করে বলেছেন, সেটি সরকারের পদত্যাগ। এটি নতুন কিছু নয়।
তিনি আরও বলেন, একটি জিনিস অবশ্যই প্রণিধানযোগ্য, সেটি হচ্ছে- তারা (বিএনপি) যে দাবি দিয়েছে, সেখানে তারা বলছেন সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী সংসদ নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদ বহাল থাকে। সংসদ বিলুপ্ত করার দাবি দুরভিসন্ধিমূলক। সরকারের পদত্যাগ বিভিন্ন সময় বিরোধীরা চান, সেটি চাইতেই পারেন। বিভিন্ন দেশে সরকারের পদত্যাগ চাওয়া হয়। সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার যে কারও আছে। কিন্তু সংসদ বিলুপ্ত করার দাবি-দাওয়া প্রচণ্ড দুরভিসন্ধিমূলক। ‘তারা আসলে দেশে একটি সাংবিধানিক সংকট তৈরি করতে চান। সাংবিধানিক সংকট তৈরি করে তারা অসাংবিধানিক কোনো কিছুকে জায়গা করে দিতে চান। সেটার লক্ষ্যে তারা সংসদ বিলুপ্ত করার দাবি দিয়েছেন। যেটি গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার হীনউদ্দেশ্যে বিএনপি এ দাবি করেছে’ বলেন তিনি।
বিএনপি ৩১ দফায় বলেছে যে পরপর দুই মেয়াদের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা নানা সময়ে নানা দফা দেন। কোনো সময় ৩১ দফা, কোনো সময় ৩২ দফা। এভাবে নানা দফা দেন। এ বিষয়ে তাদের মত কী, তারা আগে ব্যাখ্যা করুক, তারপর আমরা মতামত দেবো।’
এর আগে মন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে মানুষের সামনে ধারণা দিয়েছিলাম, স্লোগান দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশের। এটি বাস্তবায়িত হয়েছে। ১৭ কোটি মানুষের দেশে ১৮ কোটি সিম ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে মাত্র ৫০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতো, সেখানে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপান্তরিত হয়েছে। একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে, দ্বীপ অঞ্চলে, চর অঞ্চলে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে ব্রডব্যান্ড কানেকশন এবং ক্যাবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সব টেলিভিশন চ্যানেল দেখা যায়।
মেঘ