আর্কাইভ থেকে জাতীয়

অধরা ইয়াসমিনসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার বন্ধের আহ্বান সিপিজে’র

অধরা ইয়াসমিনসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার বন্ধের আহ্বান সিপিজে’র
সংবাদ প্রকাশের জেরে বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভির ঢাকা কার্যালয়ের নিজস্ব প্রতিবেদক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত বন্ধে দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। সে সঙ্গে সিপিজে সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়ে সিপিজে। বিবৃতিটি সিপিজের এশিয়া শাখার টুইটার অ্যাকাউন্টে টুইট করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হয়। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের হয়রানি করতে এই আইনের ব্যবহার দেখা গেছে। চলতি বছরের মার্চে প্রথম আলোর সাংবাদিককে (শামসুজ্জামান শামস) গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে এই আইনের আওতায় একাধিক তদন্ত শুরু করা হয়। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক সংবাদপত্রের নেতৃত্ব ও কর্মীদের ওপর এই আইনের ব্যবহার বন্ধে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সিপিজে ও অন্যান্য অধিকার সংগঠনগুলোও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে সিপিজের প্রোগ্রাম পরিচালক কার্লোস মার্তিনেজ দে লা সেরনা বলেন, আতঙ্কের বিষয় এটা যে বাংলাদেশি সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনকে তাঁর কাজের জন্য কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে চলা তদন্ত বন্ধ করতে হবে। সাংবাদিকদের হয়রানি করতে এই আইনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যে অধরা ইয়াসমিন তাঁর কাজের জন্য রোষের শিকার হবেন না। চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে চলতি বছরের ১৩ মে মামলাটি করেন পীর সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা শাকেরুল কবির। মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম সোমবার (১০ জুলাই) আরটিভিতে চিঠি দেওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। জানা গেছে, রাজধানীর রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর দিল্লুর রহমান ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মামলাবাজি, সারাদেশে অসংখ্য মানুষকে হয়রানি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেন অধরা ইয়াসমিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অধরার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৪, ২৫ ও ২৯ ধারায় মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর দিল্লুর রহমানের মামলাবাজ সিন্ডিকেটের অন্যতম প্রধান সহযোগী শাকেরুল কবির। তার বিরুদ্ধে মামলাবাজি, জমি দখল, নারীপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে তাকে কয়েকবার আটক হয়ে কারাগারেও যেতে হয়। এর আগে, এই পীর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় অন্তত ডজনখানেক সাংবাদিককে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে চরম হয়রানি করে আসছে এই ‘মামলাবাজ সিন্ডিকেট’। সিআইডির তদন্তেও মিলেছে সেই প্রমাণ। মূলত, হাইকোর্টের বিভিন্ন আদেশ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও সিআইডির তদন্তের সূত্র ধরেই প্রতিবেদন করেন সাংবাদিকরা। আর তাতেই রোষানলে পড়তে হচ্ছে শক্তিশালী এই সিন্ডিকেটের। এদিকে, অধরার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। তারা মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন অধরা | ইয়াসমিনসহ | সাংবাদিকদের | বিরুদ্ধে | ডিজিটাল | নিরাপত্তা | আইন | ব্যবহার | বন্ধের | আহ্বান | সিপিজের