আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

রঙিন পোশাকে হোয়াইটওয়াশ হলো ভারত

রঙিন পোশাকে হোয়াইটওয়াশ হলো ভারত

তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সম্মান থাকলেও ওয়ানডেতে শেষ রক্ষা হল না ভারতের। হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় পরতে হলো ভারতকে। শেষ ম্যাচে জয়ের কাছে গিয়েও হারতে হয়েছে ৪ রানে। এক ম্যাচ আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছিলো স্বাগতিকরা। তাই শেষ ম্যাচ ছিলো ভারতের হোয়াইটওয়াশ বাঁচানোর ম্যাচ।

গেলোবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজ হারলেও একদিনের সিরিজে দাপট দেখিয়েছিলো ভারত। কিন্তু এবার একদিনের সিরিজে প্রোটিয়াদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হলো। প্রথমে ব্যাট করেই হোক বা রান তাড়া করে কোনও ব্যাপারেই তারা সফল হল না। শেষ ম্যাচে দীপক চাহারের দুরন্ত পারফরম্যান্সও কাজে লাগল না।

নিয়মরক্ষার ম্যাচে দলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার রাস্তায় হেঁটেছিল ভারত। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, শার্দূল ঠাকুর, ভেঙ্কটেশ আয়ার এবং ভুবনেশ্বর কুমারকে বিশ্রাম দিয়ে সুযোগ দেয়া হয়েছিল সূর্যকুমার যাদব, জয়ন্ত যাদব, দীপক চাহার এবং প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) টস হেরে ব্যাট করতে নামা প্রোটিয়াদের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। আগের ম্যাচে প্রায় শতরানের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া জানেমন মালানকে ব্যক্তিগত এক রানে ফেরান দীপক। এরপর টেম্বা বাভুমা ও এডেন মার্করামও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। স্কোরবোর্ডে ৭০ রান যোগ করার আগেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। কিন্তু চতুর্থ উইকেটে রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের সঙ্গে ১৪৪ রানের জুটি গড়েন কুইন্টন ডি কক। ওখানেই দক্ষিণ আফ্রিকার বড় রানের ভিত তৈরি হয়ে যায়।

৫৯ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৫২ রান করে ভ্যান ডার ডুসেন আউট হয়ে গেলেও ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে নেন ডি কক। ১৩০ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১২৪ রান করেন তিনি। জাসপ্রিত বুমরাহর বলে শিখর ধাওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরত যান ডি কক।

পরে ডেভিড মিলারের ৩৮ বলে ৩৯ রান ও ডোয়েন প্রিটোরিয়াস (২০) উল্লেখযোগ্য ছিল। শেষদিকে অবশ্য ধীর হয়ে যায় প্রোটিয়াদের রানের গতি। শেষ ১৫ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৭৩ রান তুলে সমর্থ হয় তারা। ইনিংসের এক বল আগেই ২৮৭ রানে অলআউট হয়ে টেম্বা বাভুমার দল।

এই উইকেটে ২৮৭ রান খারাপ স্কোর না। এর আগে একদিনের ক্রিকেটে ২৮৮ রান তাড়া করে এই মাঠে কোনও দল জেতেনি। সর্বোচ্চ ২৪৪ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আগেরটি। রেকর্ড গড়ে জয়ে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতেরও। দলীয় ১৮ রানেই বিদায় নেন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। এরপর শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ৯৮ রানের জুটি গড়েন বিরাট কোহলি। ৬১ রান করে ধাওয়ান ও ৬৫ রান করে আউট হন কোহলি।

তাদের বিদায়ে দ্রুত উইকেট যাওয়ায় মনে হচ্ছিল খেলা বুঝি সেখানেই শেষ কিন্তু দলে সুযোগ পাওয়া দীপক চাহারের ব্যাটে ম্যাচ শেষ ওভার পর্যন্ত গড়ায়। আইপিএল-এ আগে তার ব্যাটের ঝলকানি দেখা গিয়েছিল এবার খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা দলকে টেনে নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই করলেন। পুরো ইনিংসে অহেতুক কোনও ভুল শট না খেলে প্রোটিয়া বোলারদের শাসালেন। শেষ দিকে একটি ভুল শট খেললেন আর তাতে উইকেটও খোয়ালেন। সেই সঙ্গে ভারতের আশাও ওই একটি শটেই নিভে যায়। 

ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও পুরো সিরিজের দুর্দান্ত ব্যাট করার প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ ও সিরিজের পুরস্কার পান দক্ষিণ আফিকার উইকেটকিপার কাম ব্যাটার কুইন্টন ডি কক। ভারতকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়ে প্রতিপক্ষকে সর্বোচ্চ হোয়াইটওয়াশ করার পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ স্থানে বসল প্রোটিয়ারা। এর আগে পাকিস্তান প্রতিপক্ষকে সর্বোচ্চ ২০ বার হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়েছিলো। এবার সেখানে প্রোটিয়ারাও যুক্ত হলো।

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন রঙিন | পোশাকে | হোয়াইটওয়াশ | হলো | ভারত