আর্কাইভ থেকে ঢালিউড

পরীমণির ছেলের নাম নিয়ে মুখ খুললেন তসলিমা নাসরিন

পরীমণির ছেলের নাম নিয়ে মুখ খুললেন তসলিমা নাসরিন
গেলো বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ঘটা করে একমাত্র ছেলে ‘শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য’র জন্মদিন পালন করেছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণি। তবে জন্মদিনের উৎসবে ছিলেন না রাজ্যর বাবা শরীফুল রাজ। এর কয়েকদিন আগেই পরীমণি ছেলের পুরো নামের শেষে ‘রাজ্য’র পরিবর্তে লিখেছেন নাম ‘শাহীম মুহাম্মদ পদ্ম’। নতুন নামের আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতে পরীমণি জানান তার ছেলের আরও একটি নাম রয়েছে ‘পুণ্য’। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে। এবার এ নিয়ে মুখ খুললেন আলোচিত-সমালোচিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তার দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ঠিক এক বছর আগে  লিখেছিলাম '' ... স্বামীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে বাচ্চার নাম রাখাটা বিশেষ পছন্দ হয়নি। স্বামীট্বামীরা আজ আছে, কাল নেই। সন্তান তো চিরদিনের। পরী তাঁর নামের সঙ্গে মিলিয়ে সুন্দর একটি বাংলা নাম রাখতে পারতেন। পরীর জায়গায় আমি হলে 'রাজ্য' নয়, ডাকনাম রাখতাম  'পরমানন্দ'।  ভালো নাম 'শাহীম মুহাম্মদ' নয়, রাখতাম 'পরমানন্দ প্রাণ'।'' আজ শুনি পরীমণি তাঁর নিজের নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে ছেলের নাম রেখেছেন বা রাখতে চাইছেন, পদ্ম অথবা পূণ্য। দুটো নামই সুন্দর। ফুলের নামে শুধু মেয়ের নয়, ছেলের নামও হওয়া উচিত। ফুলের অনেক নামই অবশ্য ছেলেদের নাম, যেমন কমল, উৎপল, পঙ্কজ, কুমুদ, অম্বুজ, নলিনী, কামিনী, বকুল, সরোজ, নীরজ, কিংশুক, পলাশ, এরকম অনেক। পূণ্য নামটি আমার বিশেষ পছন্দের। পরীমণি তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষী এবং স্বজন বন্ধুদের নিয়ে খুব ঘটা করে ছেলের জন্মদিনের উৎসব করেছেন। এই উৎসবে ছেলের পিতার উপস্থিতি জরুরি ছিল না। পরীমণি দেখিয়ে দিয়েছেন তাঁর সন্তানকে একাই তিনি লালন পালনই শুধু নয়,  সন্তানের জন্য আনন্দ উৎসবের বিশাল আয়োজনও করতে পারেন। মেরুদণ্ড দৃঢ়  হলে, আত্মবিশ্বাসী হলে স্বামীকে দরকার হয় না। অত্যাচারী স্বামী নিয়ে সারা বিশ্বে  কত মেয়েই যে অশান্তির  সংসার করছে, তাদের কিন্তু একা বাঁচার সাহস করতে হবে। জীবন একটিই, এই একটি মাত্র জীবনকে নিষ্পেষিত আর নির্যাতিত হতে দেওয়া কোনও বুদ্ধির কাজ নয়। পরীমণিকে তাঁর সততা, স্বতস্ফুর্ততা, সৎসাহসের জন্য আমার অভিনন্দন। এই সময় কিছু কথা জরুরি বলে মনে হচ্ছে বলে বলছি, সন্তান জীবনের সব নয়।  সন্তানকে ঘিরে জীবন আবর্তিত হওয়া উচিত নয়। যদিও পিতৃতান্ত্রিক সমাজ চায়, মেয়েদের জীবনের কোনও মূল্য না থাকুক, সন্তান পালনই তাঁদের একমাত্র বা  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হোক। পরীমণি যতই সন্তান নিয়ে মেতে থাকেন, পুরুষেরা ততই তাঁকে বাহবা দেয়। 'ভাল মা' উপাধি দেয়।  সন্তানের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে হয় না, সন্তানকে ভাল গাইড করলেই সন্তান ভাল মানুষ হয়। পরীমণিকে আমি বাহবা দেব তিনি যদি নিজের অভিনয়ের কাজটিতে আরও মনোযোগী হন , অভিনয়ের চর্চা আরও করেন, অভিনয়ে  আরও পারদর্শি হন, আরও বড় শিল্পী হয়ে ওঠেন। মনে রাখতে হবে  মাতৃত্বেই মেয়েদের জীবনের সার্থকতা নয়। শিল্পীর কাজ অন্যত্র।  'ভাল মা' এর চেয়ে তাঁর বড় পরিচয় হোক ''ভাল শিল্পী'। 'ভাল মা' যে কোনও মেয়েই হতে পারে, 'ভাল শিল্পী' যে কোনও মেয়েই হতে পারে না।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন পরীমণির | ছেলের | নাম | নিয়ে | মুখ | খুললেন | তসলিমা | নাসরিন