আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

এবার ইউক্রেনের হামলা ঠেকাল রাশিয়া

এবার ইউক্রেনের হামলা ঠেকাল রাশিয়া
ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম সড়ক ও রেল সেতুতে ইউক্রেনের হামলা ঠেকিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, ক্রিমিয়ার ওই সেতুতে হামলার জন্য দু’টি রকেট নিক্ষেপ করেছিল ইউক্রেন। তবে সেতুতে আঘাত হানার আগেই সেগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়। শনিবার (১২ আগস্ট) স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে এই ঘটনা ঘটে। রোববার (১৩ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ান উপদ্বীপকে সংযুক্ত করা কের্চ সেতুকে লক্ষ্য করে দু’টি ইউক্রেনীয় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল বলে মস্কো জানিয়েছে। তবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই সেগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিওতে কের্চ ব্রিজের কাছে ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুতে হামলার জন্য এস-২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল এবং আঘাত হানার আগেই সেগুলো গুলি করে নামানো হয়। এ ঘটনায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অবশ্য অভিযুক্ত এ হামলার বিষয়ে ইউক্রেন এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে গেলো কয়েক মাসে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম সড়ক ও রেল এ সেতুটিকে লক্ষ্য করে অন্তত আরও দু’টি হামলা হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার দুপুর ১টার দিকে সেতুটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইউক্রেন। এছাড়া সেতুতে হামলা চালাতে এস-২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলেও শনাক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এ ধরনের গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্নায়ু যুদ্ধের যুগে সারফেস-টু-এয়ার অস্ত্র হিসেবে মূলত শত্রু বিমানকে ধ্বংস করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এদিকে হামলাচেষ্টার ঘটনার পর প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এই ধরনের বর্বর কর্মকাণ্ডের... জবাব দেওয়া হবে।’ এদিকে ক্রিমিয়ার রাশিয়া-নিযুক্ত গভর্নর সের্গেই আকসিওনভ জানিয়েছেন, হামলা চালাতে আসা তৃতীয় একটি রকেটকে কের্চ প্রণালীতে গুলি করে নামানো হয়েছে। এর আগে শনিবার রাশিয়া বলেছিল, তারা ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে ২০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপের দখল নেয় রাশিয়া। পরে এ দ্বীপের সাথে রাশিয়ার সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য দীর্ঘ ১৯ কিলোমিটার সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ক্রিমিয়া দ্বীপ দখলে নেয়ার চার বছর পর ২০১৮ সালে সেতুটিকে রাশিয়ার পরিবহন নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মহা ধুমধাম করে সেটির উদ্বোধন করেছিলেন। ইউক্রেন যুদ্ধে এই সেতু রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সরবরাহ রুটে পরিণত হয়েছে। কারণ ইউক্রেনের দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ সৈন্যদের কাছে অস্ত্র ও সামরিক রসদ পাঠানোর অন্যতম পথ ক্রিমিয়া উপদ্বীপের দীর্ঘ এই সেতুটি। ১২ মাইল (১৯ কিলোমিটার) দীর্ঘ এই সড়ক ও রেল সেতুটি গেলো বছরের অক্টোবরেও একটি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ক্রেমলিন সেসময় বলেছিল, ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী ওই হামলা চালিয়েছিল। অবশ্য কয়েক মাস পর ইউক্রেন পরোক্ষভাবে ওই হামলার কথা স্বীকার করে। এছাড়া মাসখানেক আগেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুতে ইউক্রেনীয় হামলার ঘটনা ঘটে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন এবার | ইউক্রেনের | হামলা | ঠেকাল | রাশিয়া