ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্যা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মাহবুবুল আলম।
সোমবার (১৪ আগস্ট) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন নতুন পরিচালনা পর্ষদের (২০২৩-২৫) কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন মো. জসিম উদ্দিন-এর নেতৃত্বাধীন ২০২১-২৩ এর পরিচালনা পর্ষদ।
নতুন পরিচালনা পর্ষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতির সহ-সভাপতি এবং এফবিসিসিআই’র ২০২১-২৩ পর্ষদে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মো. আমিন হেলালী।
চেম্বার গ্রুপ থেকে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, গাজীপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার ও বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি যশোদা জীবন দেবনাথ।
অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি শমী কায়সার, মেইজি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি রাশেদুল হোসেন চৌধুরী রনি এবং এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি মো. মুনির হোসেন।
দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র নতুন সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই। আজ থেকে আমরা সবাই এক। আমাদের কথা এবং দাবিও হবে এক। দিন শেষে আমাদের একটাই পরিচয় আমরা ব্যবসায়ী। বেসরকারি খাতের সুরক্ষা এবং বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে আমরা সবাই মিলে কাজ করব।
এ বছর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিট বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে নতুন করে তুলে ধরেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জসিম ভাই (বিদায়ী সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন) যে বিজনেস সামিট আয়োজন করেছিলেন, সেটি ছিল অনবদ্য একটি আয়োজন। আমরাও বাংলাদেশ বিজনেস সামিট আয়োজন করতে চাই। এজন্য নতুন বোর্ড সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।
নতুন পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সঙ্গে সাবেকদের সহযোগিতা চান মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। বিশেষ করে জেনারেল বডি মেম্বার ছাড়া চলতে পারেনা এফবিসিসিআই। তাই এফবিসিসিআইকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাই। পুরান ঢাকায় একটা লেয়াজু অফিস প্রস্তুত করাসহ রাজধানী ঢাকায় একটি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার করতে চাই, যা আমরা ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে করেছি।
নতুন পর্ষদের দায়িত্ব নিয়ে বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনার কথা জানান মাহবুবুল আলম। তার মধ্যে রয়েছে- খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসহ ২১ সদস্যবিশিষ্ট অ্যাডভাইজরি কমিটি গঠন, এফবিসিসিআই’র অধীনস্থ সব চেম্বার অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে একটি ওয়েব পোর্টাল প্রস্তুত, প্রতি তিন মাসে অন্তত একটি স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা ইত্যাদি। এসময় গুলশানে এফবিসিসিআই’র শাখা অফিস খুব শিগগিরই চালু করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এফবিসিসিআই’র বিদায়ী সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, শুরুতেই আমি নতুন বোর্ডকে স্বাগত জানাই। আপনারা আগামীর বাংলাদেশে সাড়ে ৩ কোটিরও বেশি ব্যবসায়ীকে নেতৃত্ব দেবেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ছিল মাত্র ৭৯ বিলিয়ন ডলার, বর্তমানে যেটি হয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। সামনে আমাদের ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির জার্নি রয়েছে, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেখানে নতুন বোর্ডের ওপর অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আমার বিশ্বাস তারা সেটি সফলভাবে করতে পারবেন।
২০২৩-২৫ এর পরিচালনা পর্ষদের মধ্যে চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে ৪০ জন করে মোট ৮০ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্য থেকে একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং ছয়জন সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
বর্তমানে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হন ১৯৮৩ সালে। গত প্রায় চার দশকে কমোডিটি ট্রেডিং থেকে শুরু করে ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা, পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন তিনি। বর্তমানে ৯টি খাতে ১৭টি ব্যবসার উদ্যোগ রয়েছে মাহবুবুল আলমের।
এএম/